নাটোরের গুরুদাসপুর শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া নন্দকুজা নদীর তীরে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ তৈরি হয়েছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি ছড়াচ্ছে বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণু। বার বার পৌর কর্তৃপক্ষকে বলার পরও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। এর ফলে শহরবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে।
জানা গেছে, রাজশাহীর চারঘাট স্লুইচগেট দখল আর দূষণের কারণে মরতে বসেছে নন্দকুজা নদীটি। নদীর পাড়ে অবাধে ফেলা হচ্ছে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা আবর্জনা। এর প্রভাবে পার্শ্ববর্তী গুমানী নদীও দূষণের শিকার হয়ে এখন অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিদিনের পচা পরিত্যক্ত খাবার, দইয়ের খালিবাটি, ডিমের খোসা, পলিথিন, মুরগীর নাড়িভুঁড়ি, প্লাস্টিকের বোতলসহ নানা ধরনের দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা আবর্জনা নন্দকুজা নদীর পাড়ে ফেলা হয়েছে। গরু, ছাগল, মুরগী, কুকুর মারা গেলেও নদীতে ফেলে দেয়া হচ্ছে। এমনকি পৌরসভার ময়লা ফেলার গাড়িটিও নন্দকুজা নদীপাড়ে এসে আবর্জনার স্তুপ করে রেখে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য ও পরিবেশ দূষণের এই ঝুঁকি থেকে জনসাধারণসহ নন্দকুজা নদীকে বাঁচাতে উপজেলা প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন স্থানীয় নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি ও পরিবেশবাদীরা।
এ বিষয়ে চলনবিল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, নন্দকুজা নদীপাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। পৌরসভার সব ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। এই দুর্গন্ধ নদীপাড়েরর বাড়িগুলোকেও ভোগাচ্ছে। নদীপাড়ে তো যাওয়াই না বরং বাড়িতে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আত্হার হোসেন বলেন, নন্দকুজাকে বাঁচাতে এখনই দখল-দূষণ রোধ করতে হবে। ময়লা আবর্জনা নদীর পানিতে মিশে নানা রোগ ছড়াচ্ছে। নদী না বাঁচলে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বলেন, নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ২০০ অবৈধ দখলদারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। দূষণ রোধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র মো. শাহনেওয়াজ আলী বলেন, ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য পৌর এলাকার সবপয়েন্টে ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট জায়গাও তৈরি হচ্ছে। নদীপাড়ে ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিবেশ দূষণ করা যাবে না বলেন পৌর মেয়র।