চট্টগ্রাম:
চট্টগ্রাম নগরীর নিমতলা এলাকায় করোনা ভাইরাস রোগী শনাক্তের খবর মিলেছে বুধবার। এরপর থেকে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত নারীর পরিচয় খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে আসে অনেক তথ্য। একপর্যায়ে জানা যায়, ওই নারী নিমতলার নন, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বাসিন্দা। চট্টগ্রামে এসেছিলেন বোনের বাড়িতে, ডাক্তার দেখাতে।
ওই নারীর নমুনায় করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হওয়ার পর থেকে চলছে নানা যোগ-বিয়োগ। কীভাবে সংক্রমিত হয়েছিলেন সে সম্পর্কে তেমন কিছু না জানা গেলেও অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে শঙ্কা জাগানিয়া বেশ কিছু তথ্য।
জানা যায়, ওই নারীর করোনা শনাক্তের খবর মিলেছে দাফনের পর। এর আগে তিনি কোম্পানীগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামে যান। সেখানে বেশ কিছুদিন অবস্থান করেন। তার মৃত্যুও হয় চট্টগ্রামে। এরপর তার মরদেহ কোম্পানীগঞ্জে নিয়ে করা হয় দাফন। এই পুরো প্রক্রিয়ায় তার করোনা শনাক্তের বিষয়াটি কারও জানা ছিল না। যে কারণে তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে সংক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে শঙ্কার মেঘ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, করোনা শনাক্ত হওয়া ৩০ বছর বয়সী ওই নারীর বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরহাজারী গ্রামে। গত ২৪ মার্চ তিনি চট্টগ্রামের পশ্চিম নিমতলায় আব্দুল লতিফ শাহ মাজার গলি এলাকায় তার বোনের বাসায় আসেন।
এরপর গত রবিবার (১২ এপ্রিল) ওই নারী জ্বর নিয়ে মারা যান। সন্দেহ হলে বোনের পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস-বিআইটিআইডিতে জানান। খবর পেয়ে বিআইটিআইডি থেকে মানুষ পাঠিয়ে তার নমুনা পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার (১৫ এপ্রিল) নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর তার কোম্পানীগঞ্জের বাড়ি ও নিমতলায় বোনের বাসা লকডাউন করে স্বজনদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘করোনা শনাক্ত হওয়া ওই নারী গত রবিবার নগরীর নিমতলায় মারা যান। ওনার আগে থেকে জ্বর থাকায় ওই বাসার সদস্যদের সন্দেহ হয়। তারা ফৌজদারহাট বিআইটিআইডিতে কল দিয়ে বিষয়টি জানায়। তখন বিআইটিআইডি থেকে লোক এসে ওই নারীর নমুনা পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায়।’
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘উপজেলার চরহাজারী গ্রামের মৃত ওই নারী গত ২৪ মার্চ চট্টগ্রামে যান ডাক্তার দেখাতে। ওনার মানসিক সমস্যা ছিল। পরে উনি মারা যান। লাশ উপজেলায় আসার পর স্বাভাবিক নিয়মেই ওনার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ওনার বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছি। একইসঙ্গে ওই নারীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকা করে তাদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হচ্ছে।’
চট্টগ্রামের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী বলেন,‘করোনা শনাক্ত হওয়া নারী নোয়াখালী থেকে নগরীর নিমতলায় তার বোনের বাসায় এসেছিলেন। তিনি মূলত এখানে ডাক্তার দেখানোর জন্য আসেন। পরে চট্টগ্রামেই তার মৃত্যু হয়। তাকে নোয়াখালীতে দাফন করা হয়েছে। আমরা তার বোনের নিমতলার বাসা লকডাউন করেছি।’