স্টাফ করেসপন্ডেন্ট:
সীমিত আকারে সকল তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দেয়ার অনুমতি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ)।
সংগঠনের সভাপতি কাজী ইফতেখার হোসাইন মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবের কাছে এই চিঠি পাঠিয়েছেন।
ইফতেখার হোসাইন বলেন, ‘বিজিএমইএর মতোই সীমিত আকারে কিভাবে গার্মেন্টস খোলা যায় সে ব্যাপারে দিক নির্দেশনা জানতে আমরা চিঠি দিয়েছি।’
সীমিত আকারে যদি গার্মেন্টস চালু রাখা সম্ভব হয় তাহলেও আমরা প্রতিযোগিতায় কিছুটা টিকে থাকতে পারবো। নতুবা দীর্ঘ সময় গার্মেন্টস বন্ধ থাকলে একদিকে দেশি ও বিশ্ববাজারে আমরা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবো না, অন্যদিকে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। সে কারণেই চিঠি দেয়া।’
তবে গার্মেন্টস খোলার সুনির্দিষ্ট কোনও তারিখের বিষয়টি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি বলেও জানান বিজিবিএ সভাপতি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের প্রধান রফতানি খাতের ব্যবসা ধরে রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিভাবে পোশাক খাতের কর্মকাণ্ড ও সংশ্লিষ্ট যানবাহন সীমিত আকারে চালু করা যায় তার পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।
সংগঠনটির দাবি, পোশাক খাতের প্রতিযোগী দেশগুলো ধীরে ধীরে ব্যবসা খুলে দিচ্ছে। তা ছাড়া বিশ্বব্যাপী কিছু পোশাকের চাহিদা বাড়ছে।
বর্তমানে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের পোশাক খাতের যে সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তা অব্যাহত রাখা না হলে প্রতিযোগী দেশগুলোতে এই ব্যবসা স্থানান্তরের হুমকি রয়েছে।
একবার সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পুনরায় তা প্রতিস্থাপন করা বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
এদিকে গণভবনে এক ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি মেনে কারখানা খোলার বিষয়ে ইঙ্গিত দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লকডাউন নিশ্চিত করে সীমিত পর্যায়ে হলেও উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে। এ জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শর্ত মেনেই কাজ করতে হবে।
চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিলেও ‘লকডাউন’ চলার মধ্যেই গত ৪ এপ্রিল কিছু পোশাক কারখানার মালিক প্রতিষ্ঠান চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিলে যানবাহন না পেয়ে দেশে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শত শত মাইল পথ পায়ে হেঁটে ঢাকা অভিমুখে আসতে থাকেন পোশাক শ্রমিকরা।
এ নিয়ে দেশজুড়ে তুমুল বিতর্কের মুখে ওইদিন রাতে সব কারখানা মালিককে আবার ছুটি ঘোষণা করার আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক। এরপরই কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমানও।
তবে দেশজুড়ে এই করোনা মহামারির মধ্যে লাখ লাখ পোশাক কর্মীকে ঢাকায় নিয়ে এসে এবং একদিন পরই তাদের গ্রামে ফেরত পাঠানোয় সারা দেশে ভাইরাসের বিস্তার আরও ব্যাপক হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।