নিজস্ব প্রতিবেদক,বৃহস্পতিবার,৩১ মে ২০১৮ : মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালন ও যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়ে জাতির মানহানির অভিযোগে ঢাকার আদালতে দায়ের করা পৃথক দুটি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই দুটি মামলায় পরোয়ানা তামিলপূর্বক জামিন চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার (৩১ মে) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী, খন্দকার মাহবুব হোসেন ও জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান, অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ রানা প্রমুখ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ হোসেন ও এএম আমিন উদ্দিন।
এর আগে গত ২২ মে ওই দুই মামলায় জামিন চেয়ে আদালতে অনুমতি চান খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। সেই আবেদন দুটি গত ২৯ মে শুনানি হয়। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল অন্য মামলার শুনানিতে থাকায় আজ বৃহস্পতিবার তার শুনানীপূর্বক আদেশের দিন ধার্য করেন আদালত।
মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিযোগ:
আদালত সূত্র জানায়, বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট আদালত-৭ এ মানহানির মামলা করেন বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। এ মামলায় ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়। এরপর গত ১২ এপ্রিল আইনজীবীরা এ মামলায় তার জামিন চান। এরপর গত ১৭ মে আদালত তৃতীয়দফায় সময় পিছিয়ে আদেশের জন্য আগামী ৫ জুলাই আদেশের জন্য দিন ধার্য্য করেছেন। এ অবস্থায় তার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগ:
মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২২ এ মামলাটি করেন। এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৭ নবেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর গত ২৫ এপ্রিল এ মামলায় খালেদা জিয়া জামিন চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু জামিন না দিয়ে ১৭ মে শুনানির দিন নির্ধারণ করেন আদালত। পরবর্তীতে ওই তারিখে তার গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরের আদেশ দিয়ে ৫ জুলাই জামিন বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য্য করেন। এ অবস্থায় তার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
উল্লেখ্য, আজ কুমিল্লায় হত্যা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুটি মামলাতেও খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। ওইদিন মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে রাষ্টপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করা নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩১ মে) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।