নিউজ ডেস্ক,বৃহস্পতিবার, ২ আগস্ট ২০১৮:
ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিমের পরিবারকে ২০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি তাদের সান্ত্বনা দেন বলে তার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেছেন কুর্মিটোলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবার। প্রধানমন্ত্রী শোকাহত দুই পরিবারকে সান্ত্বনা ও প্রতি পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র অনুদান দিয়েছেন।”
পরে দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর ফকির সাংবাদিকদের বলেন বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আমাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন; আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের কঠোর শাস্তি হবে।”
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর বলেন, “বাবারা তোমরা যারা কষ্ট করছো, তোমরা ঘরে ফিরে যাও।”
২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসের জন্য অপেক্ষার সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের নিচে চাপা পড়েছিলেন ঢাকার রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দিয়া ও করিম।
ঘটনার বর্ণনায় পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ফ্লাইওভারের কাছে শিক্ষার্থীরা বাসের জন্য ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন দুটি বাসের পাল্লা দেওয়ার মধ্যে একটি শিক্ষার্থীদের উপর উঠে যায়।
এই দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। গত দুই দিনে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে অনান্য শহরেও।
এই প্রেক্ষাপটে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বুধবার রাতে ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে’ বৃহস্পতিবার দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনার কথা জানান।
এই ঘোষণার পরও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর অন্তত ২০টি পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে বলে ট্রাফিক পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ফলে গত তিন দিনের মতই ঢাকার বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে গত কয়েক দিনের বিক্ষোভের মধ্যে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় পরিবহন মালিকরাও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাস ছাড়ছেন না। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর ফকির, ভাই-বোন, মা এবং আবদুল করিমের মা মহিমা বেগম, বোন ও পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া ছিলেন রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের প্রিন্সিপাল নূর নাহার ইয়াসমিন।
দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার নেই। আপনাদের কষ্টটা আমি বুঝি।”
প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম জানান, দিয়ার বাবা পরিবহন খাতের কিছু সমস্যা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। চালকদের লম্বা সময় গাড়ি চালাতে হয়, ক্লান্ত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটে- এসব বিষয়েও বলেন।
“এ সময় দুই পরিবারের সদস্যরাই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, আমরা চাই, ছাত্র-ছাত্রীরা ঘরে ফিরে যাক।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।