স্বপন রানা সোহেল
মানিকগঞ্জ জেলাধীন সাটুরিয়া উপজেলার ২ নং দিঘলীয়া ইউনিয়নের দুই-দুইবার ব্যাপক ভোটে নির্বাচিত সফল ও শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যানের পুরস্কারপ্রাপ্ত সাবেক চেয়ারম্যান জনাব আব্দুল ওহাব খোকন ইন্তেকাল করেছেন। আধুনিক দিঘলীয়ার রুপকার গন মানুষের নেতা, সৎ ও নির্ভীক, সাটুরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এই চেয়ারম্যান আজ ভোর ৩.৩০ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্ননিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহে রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও দুই মেয়ে এবং তিন ভাই ও তিন বোন সহ অসংখ্য ভক্ত ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মানিকগঞ্জ জেলাধীন সাটুরিয়া উপজেলার ২ নং দিঘলীয়া ইউনিয়নের বেংরোয়া গ্রামে ১৯৬৫ সালের ১লা জানুয়ারি বিখ্যাত তালুকদার পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন কায়েম উদ্দিন তালুকদারের ছয় ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে অষ্টম সন্তান জনাব আব্দুল ওহাব খোকন।ছাত্র জীবন থেকে অসম্ভব মেধাবী ও ডানপিটে স্বভাবের সবার ভীষণ আদরের খোকন ছিলেন ব্যাপক প্রতিবাদী অপ ভীষণ দেশপ্রেমিক তাই অন্যান্য ভাইদের মত শহর ও প্রবাসী জীবন বেছে না নিয়ে দাদা-বাবার মত গ্রামের বিচার ও জনসেবাকেই তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে বেছে নিয়ে ব্যাবসার পাশাপাশি হয়ে গেলেন সবার ভালোবাসা আর জনপ্রিয়তায় এক তুমুল জনপ্রিয় তরুন জননেতা। তাই পারিবারিক ঐতিহ্য রক্ষায় ও জনগণের ব্যাপক চাহিদায় মুখে দিঘুলিয়া ইউনিয়নের সর্বকালের তরুণ তথা কনিষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে ১৯৯৭ইং সাল থেকে ২০১১ইং সাল পর্যন্ত বিপুল ভোটে দুইবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দিঘলীয়া ইউনিয়নের এযাবৎকালীন সবচেয়ে সফল ও সর্বশ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তাঁর ১৪ বছরের চেয়ারম্যানি সময়ে নিভৃত চরম অনুন্নত ও অবহেলিত ইউনিয়নকে তিনি অত্যাধুনিক ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলেন। ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ ৮০ রাস্তাঘাট পাকা করণ, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা, কমিউনিটি হাসপাতাল শ্তাপন ও দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। এছাড়া দুস্থ গরীব গ্রামবাসীকে সরকারি সহায়তার আওতায় এনে ও বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করে অনুন্নত দিঘলীয়া ইউনিয়ন কে উন্নয়নের আক রোল মডেল হিসেবে তৈরি করে শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি পুরস্কৃত হন। যার ফলে জনগণের মনের মণিকোঠায় এক গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তার চিরস্থায়ী স্থান দখল করে আছেন আজও। তা প্রমাণিত হয় তার দুই জানাজায় হাজার হাজার মানুষের দুঃখ ভারাক্রান্ত উপ্পস্থিতি।
সদা হাস্যজ্জল মানুষ ও বহু গুনের অধিকারী ছিলেন এই সদ্য প্রয়াত নেতা। তার বহুমুখী প্রতিভায় অালোকিত ছিলো তার ইউপি। তিনি প্রতিনিয়ত সহজ সরল জীবন যাপন করতেন তাই এলাকা বাসী তাকে ভালোবেসে সাদা মনের মানুষ বলে ডাকতো। সকলের প্রতি অগাধ ভালাবাসা অার বিশ্বস্ত নেতৃত্বের প্রতি উপজেলাবাসীর মানুষের আস্থা ছিল আকাশচুম্বি।তার অকাল মৃত্যুতে নিজ এলাকা সহ পুরো উপজেলায় শোকের ছায়া নেমে অাসে। স্থানীয় দের সাথে কথা বললে তারা বলে, ”সদা হাস্যজ্জল মুখটি অার দেখতে পারবে না দিঘুলীয়াবাসী, যার হাসিতে মায়া ছিলো, তার বিনয়ী ও ভদ্রতায় ছিলো যাদুর ছোয়া, সব মিলিয়ে বলাযায় সাটুরিয়া থানার দিঘুলীয়া ইউপির সাবেক চেয়াম্যান অাব্দুল ওহাব খোকন ঝলমলে একটি তারকা ছিলো, গ্রামের প্রতিটি মানুষ তার মুখের দিকে তাকালে ঝলমলে হাসিতে নতুন স্বপ্ন দেখতো, তাই তো প্রতিটা গ্রামের অানাচে কানাচে, প্রতিটি পরিবার সহ ছোট বড় সকলের শ্রেনীর মানুষের হৃদয় জুরে ছিলো তার বসবাস। অামাদের খোকন চেয়ারম্যান কে হারিয়ে অাজ অামরা একজন ভালো অভিভাবক হারালাম, অামাদের এ শূন্যস্থান অার পুরণ হবার নয়।”
মরহুমের প্রথম জানাজা আজ দুপুর ২.৩০ মিনিটে তার নিজ গ্রামের ঐতিহ্যবাহী বেংরোয়া ঈদগা মাঠে ও জনগণের ব্যাপক চাওয়ায় তাঁর দীর্ঘদিনের কর্মস্থল ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইউনিয়ন কাউন্সিল ভবনের সামনের মাঠে দুপুর ৩.৩০ মিনিটে দ্বিতীয় জানাজা অনুস্থিত হয়। উভয় জানাজায় হাজারহাজার মানুষের উপস্থিতি ও গভীর শ্রদ্ধা এবং শোক প্রমাণ করে দেয় জনাব আব্দুল ওহাব খোকন তাদের মাঝে আজীবন বেঁচে থাকবেন গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার মধ্য দিয়ে মনের মণিকোঠায়।
জনগণের খোকন চেয়ারম্যানের এই অকাল মৃত্যুতে সাটুরিয়া উপজেলার এক রূপকথার চিরসবুজ তরুণ ও এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন হলো। এতিম হলো পুরো পরিবার ও ইউনিয়নবাসি।