1. shahinit.mail@gmail.com : dhaka24 : ঢাকা টোয়েন্টিফোর
  2. arifturag@gmail.com : ঢাকা টোয়েন্টিফোর : ঢাকা টোয়েন্টিফোর
মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৪ অপরাহ্ন

দেহের ভাষায় খদ্দের আসে অতঃপর…

Dhaka24 | ঢাকা টোয়েন্টিফোর -
  • প্রকাশ | মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮
  • ৯৯ পাঠক

একেবারে ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুলিশের চেকপোস্ট। দুই পাশের রাস্তায় শো শো করে গাড়ি ছুটছে। ল্যাম্পপোস্টের আলোতে ফকফক করছে চারিদিক। রাতের গভীরতা বাড়ে, বাড়ে গাড়ির চাকার গতিও। ছুটে চলা গাড়ির হেডলাইট গিয়ে পড়তেই ওদের রূপ ঝলসে ওঠে। সস্তা প্রসাধনীর প্রলেপ মুখজুড়েই, যা সহজেই নজর কাড়ে খদ্দেরের।

রাত ৯টা বাজতেই ওরা দখলে নেয় বিজয় সরণির সামনের রাস্তা। রাতের আগ বেলায় ঘর সাজাতেই ব্যস্ত থাকে ওরা। এক বেলার ঘর সেটি। তবে থাকার জন্য নয়। উপর ভাগ উদাম। খদ্দেরের মনোরঞ্জনের অস্থায়ী ঠিকানা এটি। এক ফালি কাপড় বা পলিথিন দিয়ে সাজানো এই রঙ্গকুঞ্জ। কেউ কেউ গায়ের ওড়না দিয়েই বেড়া বানিয়ে লোকচক্ষুর আড়াল করার চেষ্টা করে। মৃদু হাওয়ায় দেবদারু গাছের পাতাগুলো যখন নড়ে ওঠে, তখন উড়তে থাকে ঘরের বেড়াও।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে হয়ে মিরপুর সড়ক। সড়কঘেঁষে কোমরসম উচ্চতার প্রাচীর। প্রাচীরের এ পারেই ছোট ছোট দেবদারু গাছ। এক গাছ থেকে আরেক গাছে কাপড় টেনে ঘর তৈরি করে ওরা। আর সে ঘরেই চলে রাতভর যৌনকর্মীদের দেহ ব্যবসা।

রাজধানী ঢাকায় ভাসমান যৌনকর্মীদের অন্যতম ঠিকানা এখন বিজয় সরণির সামনের রাস্তা। হোটেল বা বাসাবাড়িতে যেসব দেহ ব্যবসায়ীর টান (কদর) কম, তাদেরই একটি অংশ রাতে ফার্মগেট, সংসদ ভবন চত্বর, বিজয় সরণি ও জিয়া উদ্যানের আশপাশে অবস্থান নেন। এসব জায়গায় এক প্রকার প্রকাশ্যেই চলে দেহ ব্যবসা।

শরীরই একমাত্র পুঁজি যাদের, তাদের দেহের ভাষা তো আলাদা-ই হওয়ার কথা। বিজয় সরণির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নারীদের দেহেও ঠিক আলাদা ভাষা মেলে। যে ভাষায় রিকশাচালক থেকে শুরু করে দামি প্রাইভেটকারের মালিকরাও থমকে যান।

৫০ বা ১০০ টাকা যাদের পুঁজি, সেসব খদ্দেরের ঠিকানা রাস্তার ওপরই। আর যেসব টাকাওয়ালা পুরুষরা এমন খোলা জায়গায় নিরাপদ বোধ করেন না, তারা গাড়িতে তুলে নিয়ে যান অপেক্ষাকৃত সুন্দরী, কম বয়সী দেহ ব্যবসায়ীদের। তবে সেক্ষেত্রে মাইনেও (বকশিশ) বেশি।

সোমবার রাতের কথা। ঘড়ির কাঁটায় রাত ৩টা ছুঁই ছুঁই। বিজয় সরণির একটু সামনে গিয়েই চোখে পড়ল আদিম এক দেহলীলা। রাস্তাঘেঁষে তিনটি রিকশা দাঁড়ানো। পাশেই চা-সিগারেট বিক্রেতা। চা বিক্রেতার কাছে আরও কয়েকজন বসা। আইল্যান্ডের ওপর মাঝারি আকৃতির গাছ। আর এ গাছই তাদের ভরসা। গাছে ঠেস দিয়েই চলছে যৌনকর্ম। গাছে সামান্য আড়াল হতে পারলেও দু’পাশ দিয়ে ছুটে চলা গাড়ির হেডলাইটের আলো একেবারেই প্রকাশ্যে নিয়ে আসছে ওদের। যৌনকর্মী আর খদ্দের উভয়ের উদাম শরীর দেখে যাত্রীদের অনেকেই বিব্রত হচ্ছেন। অনেকেই আবার গাড়ির গতি থামিয়ে উৎসাহ নিয়ে অবলোকন করছেন, যাতে একটি সমাজের অধঃপতনের প্রমাণ-ই মিলছে যেন।

চা বিক্রেতার কাছে বসেই কথা হয়, রমজান আলী নামে এক রিকশাচালকের সঙ্গে। বলেন, ‘সমাজটা একেবারেই নষ্ট হয়ে গেল। রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে এমন কাজ কেউ করতে পারে! আড়ালে-আবডালে গিয়েও তো পারে।’

কথা হয় যৌনকর্মী কনিকার সঙ্গে। বলেন, ‘আমরা তো শখে এ কাজ করি না ভাই। লজ্জা-শরম তো আমাগোও লাগে। কিন্তু এনে (এখানে) যারা কাজ করতে আহেন (আসেন), তাদের বেশির ভাগই রিকশাওয়ালা। রাস্তায় রিকশা রাইখা তো কেউ জঙ্গলে যাইব না। রিকশা হারানোর ভয়েই ওরা রাস্তায় কাজ করতে চায়।’

কনিকার সঙ্গে আলাপ শেষ না হতেই পাশের আরেকটি গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে এলেন রানী। ঘর্মোক্ত শরীর। কানের লতির কাছে তখনও চুয়ে চুয়ে ঘাম ঝরছিল।

বলেন, ‘শ্যামলীতে এক অফিসে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে জেনেছি, ঢাকায় এখন আমাগো মতো ৪০ হাজার নঢী (যৌনকর্মী) রাস্তায় কাজ করে। অন্ধকার, পার্কের ভেতর কেউ আর যেতে চায় না। পুলিশ ও ছিনতাইয়ের ভয় থাকে। এ কারণে শরীর নিয়ে রাস্তাতেই দাঁড়ায়।’

 

মেঘনায় লঞ্চ-কার্গো সংঘর্ষে বেঁচে গেল দুই শতাধিক যাত্রী / মুহূর্তেই ডুবে গেল: ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন….

 

লাইক কমেন্ড ও শেয়ার করে সাথে থাকুন-

আরো খবর

© All rights reserved | 2016 dhaka24.net by |

Theme Customized BY WooHostBD