বিয়ের অনুষ্ঠানে চিংড়ি মাছ না পেয়ে ভাঙচুর ও বিয়ে করা বউকে না নিয়ে বিয়ের আসর ত্যাগ করা চট্টগ্রামের আনোয়ারার সেই বরকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন গ্রাম্য সালিশি বৈঠক। একই সাথে বর আলমগীরকে সমাজের কাছে ক্ষমা চেয়ে নববধূকে ঘরে তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সালিশকাররা। সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে দুই পরিবার ও স্থানীয় দুই চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় সালিশি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই পক্ষের বক্তব্যের পর বরপক্ষ ক্ষমা চেয়ে কনেকে ঘরে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার জেলার আনোয়ারা উপজেলার ১১ নম্বর জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের ৮ নম্বর খুরুস্কুল গ্রামের হাজী বাড়ীর আব্দুল মোনাফের ছেলে মোহাম্মদ আলমগীর (৩০) সাথে একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী গ্রামের ব্যবসায়ীর কন্যা শারমিন আকতারের বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান ছিল।
স্থানীয় বটতলী রুস্তমহাটের আলভী ম্যারেজ গার্ডেনে চিংড়ি মাছ না দেয়ার কারণে বর আলমগীর শ্বশুর বাড়ির লোকজনের উপর চড়াও হন। তার উচ্ছৃঙ্খল আচরণে হতভম্ব হয়ে যান উপস্থিত দুই পক্ষের শত শত আমন্ত্রিত অতিথিরা। এক পর্যায়ে বর-কনে উভয় পক্ষের লোকজন ঝগড়া ও ভাংচুরে লিপ্ত হন এবং বর আলমগীর নববধূকে না নিয়ে পালিয়ে যান।
খবর পেয়ে পুলিশ ওই বিয়ের আসরে ছুটে যায়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বরকে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার নির্দেশ দেয়। সে মতে গত সোমবার সন্ধ্যার পর অনুষ্ঠিত হয় সালিশি বৈঠক।
এদিকে, দুই পক্ষকে নিয়ে সালিশি বৈঠকে বসেন বটতলী ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী এবং বরুমছড়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন চৌধুুরী। প্রায় তিন ঘণ্টার এই বৈঠক বরের পিতা আবদুল মোনাফ, চাচা শেয়ার আলী, কনের বাবা মোহাম্মদ হোসেন, নানা আহমদ শফি, আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম, আলমগীর আজাদ, জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ বাবুসহ দুই পক্ষে অন্তত ৩০ জন উপস্থিত ছিলেন।
বটতলী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান চৌধুরী জানান, ‘আমরা সালিশি বৈঠকে উভয় পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে বর-কনেকে মিলিয়ে দিয়েছি। তবে বিয়ের অনুষ্ঠানে বরের উচ্ছৃংখল আচরণের জন্য বর আলমগীরকে ৩ লাখ টাকা বৃহস্পতিবারের মধ্যে মেয়ের একাউন্টে জমা দিয়ে মেয়েকে ঘরে তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছি। তারা সে সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে।’ -বাংলাদেশ প্রতিদিন।