বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার একটি তিন তারকা হোটেলে নিয়ে জুসের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বগুড়া জেলা যুব শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর রহমান ওরফে ঝটিকা শাহীনকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার রাতে ওই ছাত্রী শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করলে রাতেই শাহীনকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার শাহীদ বগুড়া সদর উপজেলার কাটনারপাড়ার আলহাজ ওয়াজেদ আলীর ছেলে।
শাজাহানপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলাটি বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছে।
নির্যাতনের শিকার ওই কলেজছাত্রী ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার আলী খাঁ গ্রামের বাসিন্দা। বাবার ব্যবসার সুবাদে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বর্তমানে তিনি বগুড়া চকসুত্রাপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করেন। তিনি সিরাজগঞ্জ মনসুর আলী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিবিএ (অনার্স) শেষ বর্ষের ছাত্রী।
মামলায় বগুড়া জেলা যুব শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর রহমান ওরফে ঝটিকা শাহীন এবং অজ্ঞাত পরিচয় মতিউর রহমানকে আসামি করে করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ছয় মাস পূর্বে একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ওই ছাত্রীর সঙ্গে শাহিনের পরিচয়। তখন থেকে তিনি শাহীনকে আঙ্কেল ডাকতেন। মাঝে মধ্যে শাহীন তাকে ফোন করে খোঁজ-খবর নিতেন এবং যে কোনো ধরণের সহযোগিতার জন্য বলতেন।
এর মধ্যে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ওই কলেজছাত্রীর এক বন্ধু বিপদে পড়ায় সহযোগিতার তিনি জন্য শাহীনকে ফোন দেন। শাহীন তাকে বগুড়া সদরের উপশহর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকায় আসতে বলেন। তার কথা মতো ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রিক্সা যোগে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে শাহীন কালো রংয়ের জিপ গাড়িতে করে এসে তাকে তুলে নিয়ে বগুড়া সরকারি মুজিবুর রহমান কলেজের সামনে নিয়ে যান।
সেখানে মতিউর রহমানকে নামে আরও একজন তার গাড়িতে ওঠেন। সেখান থেকে শাজাহানপুরের তিন তারকা হোটেল সিয়েস্তাতে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী বাসায় ফিরতে চাইলে শাহীন বাধা দেন এবং জুস খাওয়ান। পরে ওই ছাত্রী নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়লে তাকে জোর করে একটি কক্ষে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন শাহীন।
রাতে একপর্যায়ে কৌশলে শাহীনকে কক্ষ থেকে বের দিয়ে ওই ছাত্রী ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। এরপর জ্ঞান হারান। পরের দিন ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে হোটেল থেকে বের হয়ে অটোরিকশাযোগে বাসায় ফেরেন ওই ছাত্রী। বাসায় ফিরে কাউকে কিছু না বলে কান্নাকাটি করেন। এতে অভিভাবকদের সন্দেহ হলে চাপের মুখে ঘটনার দুইদিন পর বাবা-মায়ের কাছে বিষয়টি খুলে বলেন তিনি। পরে তাদের পরামর্শে থানায় মামলা করেন।
ওই কলেজছাত্রী বর্তমানে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার তার মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।-জাগোনিউজ২৪।