২ অক্টোবর, ১৯৯৬ সাঈদ আনোয়ারের হাত ধরে পাকিস্তান ক্রিকেটে আগমন শহীদ আফ্রিদির। নাইরোবিতে কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাটিং না পেলেও বোলিংয়ে হাত ঘুরিয়ে ২ উইকেট নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে দিয়েছিলেন নিজের আগমনী বার্তা ।
৪ অক্টোবর পরের ম্যাচে কি মনে করে সাঈদ আনোয়ার আফ্রিদিকে ব্যাটিং অর্ডারে উপরে নিয়ে আসেন!
ওপেনিংয়ে সাঈদ আনোয়ারের সঙ্গী সেলিম এলাহী, তিনে আফ্রিদি। সেলিম এলাহী বেশিক্ষণ উইকেটে টিকেননি। তাই দ্রুতই মাঠে নেমে পড়তে হয় আফ্রিদিকে। প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং না পাওয়ায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেটিই ছিল আফ্রিদির অভিষেক ইনিংস। ধর্মাসেনার করা ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে যাত্রা শুরু আফ্রিদির। ওই বলে পাননি কোনো রান। পরের ৩৬ বলে পুরো চিত্রটাই পাল্টে দেন পরবর্তীতে বুমবুম খ্যাত আফ্রিদি।
ডানহাতি এ ব্যাটসম্যানের পরের ৩৬ বলের চিত্র ছিল এরকম ৬, ১, ০, ৪ , ০, ০, ৬, ০, ০, ৬, ৬, ১, ১, ৬, ৬, ২, ৬, ৪, ৪, ০, ০, ৬, ৬, ০, ৪, ১, ১, ০, ৪, ১, ৬, ০, ৬, ০, ২, ৪। অর্থাৎ ডানহাতি মারকুটে ব্যাটসম্যান নিজের অভিষেক ইনিংসে ৩৭ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেটি ছিল দ্রুততম সেঞ্চুরি।
এর আগে সনাৎ জয়াসুরিয়া সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন মাত্র ৪৮ বলে। দ্রুততম সেঞ্চুরির পাশাপাশি সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন আফ্রিদি। ওই সময়ে তার বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর ২১৭ দিন। রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আন্তর্জাতিক লাইমলাইটে আসেন।
জয়াসুরিয়ার উপর বেশ তেতে ছিলেন আফ্রিদি। না হলে কি ২ ওভারে ৫টি ছক্কাসহ ৪৩ রান নেন আফ্রিদি। তবে এ রেকর্ড আরও দ্রুত হয়ে যেত যদি না আফ্রিদি ১২টি ডট বল খেলতেন। ৩৭ বলের ইনিংসে ১২টি ছিল ডট। অর্থাৎ ২৫ বলে আফ্রিদি তিন অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন। ১১টি ছক্কা ও ৬টি চারের মারে ৯০ রান তুলেন মাত্র ১৭ বলে। শেষ পর্যন্ত ৪০ বলে ১০২ রান করে আউট হন আফ্রিদি।
১৭ বছর এ রেকর্ড নিজের কাছে রেখেছিলেন আফ্রিদি। ২০১৪ সালের পহেলা জানুয়ারি এক বল কম খেলে এ রেকর্ড ভাঙেন নিউজিল্যান্ডের কোরি অ্যান্ডারসন। তার ঠিক এক বছর পরই দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স সেঞ্চুরি হাঁকান মাত্র ৩১ বলে।
২১ বছর আগে আজকের দিনে আফ্রিদির পথ চলা। সেই আফ্রিদি এখন বিশ্বক্রিকেটের উজ্জ্বল ধ্রুবতারা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলার পর ঘরোয়া লিগগুলো খেলে যাচ্ছেন। এখনও আগের মতো হাসছে তার ব্যাট। চলছে আফ্রিদি তাণ্ডব। গত ২২ আগস্ট ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে মাত্র ৪২ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন প্রাক্তন পাকিস্তানি অধিনায়ক। হ্যাম্পশায়ারের হয়ে ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে ৪৩ বলে ১০ চার ও ৭ ছক্কায় খেলেছেন ১০১ রানের টর্নেডো ইনিংস।