আবারো ভারত। আবারো শেষ মূহুর্তের রোমাঞ্চ। ভাগ্যে বিধাতা কবে বাংলাদেশের দিকে মুখ ঘুড়িয়ে চাইবেন? এটাই হয়তো কোটি বাঙালির প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে এখন! আবারো ভারতের বিপক্ষে হারতে হল বাংলাদেশকে। এ হার কি মেনে নেওয়ার মতো? ১০ ওভারে প্রয়োজন ২৬ রান হাতে আছে ৪টি উইকেট। ৬ ওভারে প্রয়োজন ১২ রান হাতে ৩ উইকেট। এই ম্যাচও কেউ হারে?
মিরপুরের হোম অফ ক্রিকেটে বৃহস্পতিবার এশিয়া কাপের প্রথম সেমিফাইনালে ৪৯.৩ ওভারে মাত্র ১৭২ রান করে ভারত। ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেন ওপেনার ইয়াশভি জেসওয়াল।
১৭৩ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৭ রানে মাত্র ২ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন ওপেনার সাজিদ হোসেন। তার বিদায়ে প্রান্তিক নাবিলের সাথে ক্রিজে ব্যাট করতে নামেন মাহমুদুল হাসান জয়। কিন্তু বেশিক্ষন ক্রিজে থাকা হয়নি প্রান্তিকেরও।
২১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর সেখান থেকে বাংলাদেশকে টেনে দেয়ার দায়িত্বটা কাঁধে নেন মাহমুদুল হাসান জয় এবং অধিনায়ক তৌহিদ হৃদয়। কিন্তু ২১ রানের জুটি গড়ার পর ব্যক্তিগত ২৫ রানে সিদ্ধার্থ দেসাইকে উইকেট ছুঁড়ে দেন জয়। এর তিন ওভার পর লেগ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক তৌহিদ হৃদয়। ব্যক্তিগত ১০ রানে বিদায় নেন এই দলপতি।
রিশাদের বিদায়ের পর শামিম হোসেন এবং আকবর আলি মিলে দলের হাল ধরেন। দুজন মিলে ৫০ রানের জুটি গড়ে দলকে আশার আলো দেখাচ্ছিলেন।
দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন আকবর আলি। যদিও অল্পের জন্য অর্ধশতক মিস করেছেন তিনি। শামিমের সাথে ৭৪ রানের জুটি গড়ার পর শট কভার অঞ্চলে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন ব্যক্তিগত ৪৫ রানে। আকবরের বিদায়ের পর উইকেট থিতু হয়ে খেলতে থাকা শামিম তুলে নেন ফিফটি। কিন্তু ব্যক্তিগত ৫৯ রানে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।
জয়ের জন্য শেষ ২৪ বলে প্রয়োজন ছিল ৩ রান। ৯ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং করছিল মিজানুর ও রাকিবুল। ৪৭তম ওভারে দৌড়ে এক রান নিতে গিয়ে রানআউটের ফাঁদে পড়ে বাংলাদেশ। আর তারই সাথে আরো ১টি স্বপ্নের সমাপ্তি। ২ রানের কষ্টের হার নিয়ে সেমিফাইনাল থেকে ছিঠকে পড়তে হল টাইগার যুবাদের।শেষ মূহুর্তে কি ঘটেছিল বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে জেনে নিন
নাহ এটাও মেনে নেওয়া যায়! আবারো সেই ভারতের বিপক্ষেই শেষ মূহুর্তের পঁচা শামুকে পা কাঁটল টাইগার যুবাদের। আর কতো? ভাগ্যে বিধাতাও হয়তো ভারতের দিকেই মুখ ঘুড়িয়ে রাখতে পছন্দ করেন!
এক সময় জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৪৮ বলে ১২ রান। হাতে ছিল ৪ উইকেট। তবুও পারলো না বাংলাদেশ। প্রয়োজনীয় রানটুকুই নিতে পারলো না যুবা ব্যাটসম্যানরা।
জয়ের একেবারে কাছাকাছি গিয়েও তীরে এসে তরি ডোবার কাজটি করে ফেললো অনুর্ধ্ব-১৯ দলের ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ১৭৩ রানও তুলতে পারলো না তারা। অলআউট হয়ে গেলো ১৭০ রানে। ২২ বলে ৩ রান দরকার থাকা অবস্থায় শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মিনহাজুল। নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে সিঙ্গেলস নিতে গিয়ে রান আউট হন। তিনি সিঙ্গেল রান নিতে গিয়ে এ প্রান্তে এসে আবার নিজের এন্ডে ফেরার চেষ্টা করেন। কিন্তু ক্রিজে পৌঁছার আগেই রানআউট হয়ে গেলেন তিনি।
অথচ ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন দুই মিডল অর্ডার আকবর আলি ও শামীম হোসেন পাটোয়ারি। দু’জনই স্বচ্ছন্দে, অবলীলায় ভারতীয় যুবাদের বোলিং মোকাবিলা করে জয়ের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৭৪ রান যোগ হওয়ার পর আকবর আলি সুইপ করতে গিয়ে আকাশে ক্যাচ তুলে বিদায় নিলে সাজানো বাগান তছনছ হয়ে যায়।
এরপর আকবর আলি ৬৩ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয়ার পর শামীম পাটোয়ারি একাই জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন দলকে। কিন্তু জয় থেকে মাত্র ১২ রান দুরে দাঁড়িয়ে শামীমও ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। ৭৮ বলে ৫৯ রান করা শামীম ভারতীয় পেসার অজয় গঙ্গাপুরামের স্লোয়ারে শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। বাংলাদেশ তখন জয় থেকে মাত্র ১২ রান দুরে।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের সাঁড়াসি বোলিংয়ে ৪৯.৩ ওভারে মাত্র ১৭২ রানে অলআউটে হয়ে যায় ভারত। ৩৭ রান করেন ইয়াসাসভি জিসওয়াল। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম।