সেলিব্রেটিদের প্রেম-বিয়ের গুঞ্জন নতুন কিছু নয়। হলিউড, বলিউড, টলিউড ও ঢালিউডে যুগে যুগে, কালে কালে তারকাদের প্রেম-প্রণয়ের গুঞ্জনে বাতাস ভারি হয়েছে, এখনো হচ্ছে। ঢালিউডের তেমনই ক’জন নায়িকার প্রেমের গুঞ্জন অথবা সত্যিকারের প্রেম-বিয়ে নিয়ে এ আয়োজন।
শাবনাজ
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে মূলত গৎবাঁধা ছবি ও একই নায়ক-নায়িকা দেখতে দেখতে বাংলাদেশের দর্শকরা যখন ক্লান্ত ঠিক এমন সময়ে ‘চাঁদনী’ নামক চলচ্চিত্রের মুক্তি ছিল তাদের জন্য স্বস্তির। প্রবীণ পরিচালক এহতেশাম অনেক ঝুঁকি নিয়ে ছবিটি তৈরি করেন এবং সফল হন। এই ছবিটি সুপারহিট হয়। ১৯৯১ সালে এহতেশামের ‘চাঁদনী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নায়িকা হয়ে আসেন শাবনাজ। ওই চলচ্চিত্রে তার নায়ক ছিলেন নাঈম। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করতে গিয়ে ঘনিষ্ঠ হন দুজন।
একসঙ্গে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেন। শুরু থেকেই তাদের প্রেমকাহিনী মিডিয়ায় চাউর হয়। কিন্তু এ খবর তারা অস্বীকার করেন। অবশেষে ১৯৯৬ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসে অবসান ঘটান সব জল্পনা-কল্পনার।
মৌসুমী
১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে নায়িকা হিসেবে অভিষিক্ত হন মৌসুমী। শুরুতেই এই চলচ্চিত্রের নায়ক সালমান শাহকে জড়িয়ে তার প্রেমের গুঞ্জন রটলেও পরে আরেক হার্টথ্রব নায়ক ওমর সানীর সঙ্গে মৌসুমীর প্রেমের খবর চলচ্চিত্রাঙ্গনসহ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। যথারীতি প্রথমে অস্বীকার, পরে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। এখনো মৌসুমী-সানির সুখী দাম্পত্য জীবন অনেকের কাছে ঈর্ষণীয়।
শাবনূর
১৯৯৩ সালে এহতেশামের ‘চাঁদনী রাতে’ চলচ্চিত্রের নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটান শাবনূর। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সাব্বির, সালমান শাহ, রিয়াজসহ অনেকের সঙ্গে তার প্রেমের খবর চাউর হতে থাকে। অনেক জল্পনা-কল্পনার পর ২০১৩ সালে হঠাৎ শোনা যায় তিনি বিয়ের কাজটি সেরে নিয়েছেন। ঢালিউডের দাপুটে এই নায়িকার বিয়ের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তিও কম হয়নি। শাবনূর বলেন ৬ই ডিসেম্বর, আর তার বর অনীক মাহমুদ বলেন ২৮শে ডিসেম্বর। শাবনূর বলেন ২০১১, তার বর বলছেন ২০১২! আসলে শাবনূর বিয়ে করেছেন কবে, এ নিয়ে চলচ্চিত্রে তার সহকর্মীরাও বিভ্রান্ত হন। অনীক মাহমুদ ও শাবনূরের সংসারে আইজান নামে এক পুত্রসন্তান রয়েছে। বেশ ভালোই আছেন বর্তমানে শাবনূর।
পপি
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময় মনতাজুর রহমানের আকবরের ‘কুলি’ চলচ্চিত্রে সুশ্রী নায়িকা হিসেবে আবির্ভূত হন পপি। পরে শাকিল খানের সঙ্গে পপি অভিনয় করেন ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ চলচ্চিত্রে। একসঙ্গে জুটি হয়ে বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন দুজন। কিন্তু এ জুটি প্রথম চলচ্চিত্র থেকেই প্রেমের গুঞ্জনের জন্ম দেন। একপর্যায়ে পপিকে স্ত্রী হিসেবেও দাবি করেন শাকিল খান। কিন্তু পপির অস্বীকৃতিতে ঘটনা আদালতে গড়ায়। শেষ পর্যন্ত দুজন দুই মেরুতে চলে যান।
পূর্ণিমা
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিতে চলচ্চিত্রে আসেন মিষ্টি মেয়ে পূর্ণিমা। সুদর্শন নায়ক রিয়াজের সঙ্গে জুটি হয়ে অনেক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র উপহার দেন। তাদের প্রেম কাহিনী এক সময় কানে কানে ফিরতে থাকে। এরপর অবশ্য আরো এক নায়ক ও নির্মাতার সঙ্গে পূর্ণিমার প্রেমের খবর রটে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চলচ্চিত্র জগতের বাইরে বিয়ে করায় পূর্ণিমার প্রেম উপাখ্যান আর হালে পানি পায়নি। ২০০৭ সালের ৪ঠা নভেম্বরে পারিবারিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অভিনেত্রী পূর্ণিমা। তার স্বামীর নাম আহমেদ জামাল ফাহাদ। বিয়ের ৭ বছর পর ২০১৪ সালের ১৩ই এপ্রিল কন্যাসন্তানের মা হন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। মেয়ের নাম আরশিয়া।
অপু বিশ্বাস
অপু-শাকিব জুটি প্রেমিক যুগল হয়ে আছেন কোটি দর্শকের হৃদয়ে। ২০০৮ সালে বিয়ে করেছিলেন ঢালিউডের এ সফল জুটি। সেসময় ধর্মান্তরিত হয়ে অপু ইসলাম নাম রেখে শাকিবকে মুসলিম ধর্মীয় রীতিতে বিয়ে করেন অপু। আব্রাম খান জয় নামের তাদের একটি পুত্রসন্তান আছে। দীর্ঘ সময় একসঙ্গে সংসার করলেও বিয়ের বিষয়টি শাকিব-অপু গোপন রেখেছিলেন। গত বছর বিয়ের খবর ফাঁস করে দেন অপু। যা শোবিজ জগতে আলোড়ন তুলেছিল। ২০০৮ সালের ১৮ই এপ্রিল বিয়ে করেন তারা। ২০১৬ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর দেশের বাইরের একটি হাসপাতালে জন্ম হয় শাকিব ও অপুর সন্তান আব্রাম খান জয়ের। বর্তমানে শাকিব-অপুর বিচ্ছেদ হলেও সন্তান জয় মায়ের সঙ্গেই থাকেন। সূত্র: মানবজমিন