নিউজ ডেস্ক-
মঙ্গলবার,৩০ অক্টোবর ২০১৮:
লেখক ও ব্লগার হুমায়ূন কবির ওরফে জুলভার্ন দু’দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। শনিবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর সদরঘাট থেকে পিরোজপুর যাওয়ার জন্য পিএস টার্ন নামক লঞ্চে উঠেন হুমায়ূন কবির। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
হুমায়ূন কবির জুলভার্ন নামে সামহোয়্যারইন ব্লগ ও অন্যান্য ব্লগ সাইটে লেখালেখি করতেন। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি সার্জিক্যাল ইকুইপমেন্টের ব্যবসাও করতেন। তিনি রাজধানীর গ্রিনরোডে পরিবার সাথেই থাকতেন।
নিখোঁজের ঘটনায় হুমায়ূন কবিরের পরিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং- ১৯৮২) করেছেন।
হুমায়ূন কবিরের স্ত্রী মৌসুমী কবির জানান, ‘গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পিরোজপুরের উদ্দেশে গ্রিনরোডের বাসা থেকে সদরঘাট যান হুমায়ূন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় লঞ্চ ছাড়ার কথা ছিল। এরপর রাত ৮টার দিকে ফোন করলে নাম্বার বন্ধ পাই। এরপর তার সাথে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘সে পিরোজপুরগামী পিএস টার্ন নামক লঞ্চের ৭ নম্বর কেবিনের টিকেট কেটেছিল। তার সাথে প্রয়জনীয় জিনিস ছাড়া মূল্যবান তেমন কিছু ছিলনা।’
মৌসুমী কবির বলেন, ‘ফোনে না পাওয়ার পর লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায় আমার স্বামী লঞ্চে উঠেছিলেন। ৭ নম্বর কেবিন পছন্দ না হওয়ায় বয়দের ডেকে কেবিন বদলিয়ে নেন। পরে তাকে একটি ডাবল কেবিন দেয়া হয়, সেখানে তার পাশের বেডে ডেইলি স্টার পত্রিকার সাবেক এক সাংবাদিকও ছিলেন। কিন্তু, লঞ্চ ছাড়ার পর টিকিট চেক করতে গিয়ে চেকার আমার স্বামীকে খুঁজে পাননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দুই ছেলে লঞ্চে খোঁজ নিতে গেলে দু’জন কেবিন বয় তাদের জানায়— লঞ্চ ছাড়ার আগেই আমার স্বামীকে ডিবি পরিচয়ে দুই ব্যক্তি নামিয়ে নিয়ে যান।’
গ্রামে কেন যাচ্ছিলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত একটা মামলার কাজে তিনি পিরোজপুর যাচ্ছিলেন। মামলার তারিখ ছিল আজ (মঙ্গলবার)। কিন্তু, দু’দিন আগে রওনা দিয়েছেন। কারণ, গ্রামের বাড়ি মঠবাড়িয়া থেকে স্বজনেরা পিরোজপুর আসবেন। সেখানে আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।’
নিখোঁজের ছেলে আহমেদ ইমতিয়াজ শুভ বলেন, ‘বাবার কোনো সন্ধান না পেয়ে শনিবার রাতেই আমরা শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। তবে দু’দিনেও তারা বাবার কোনও সন্ধান দিতে পারেনি।’
জিডির তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুধাংশু সরকার জানান, ‘জিডির পরপরই আমরা তদন্ত শুরু করেছি। নিখোঁজ হুমায়ূন কবিরের কললিস্ট চেক করেছি। তিনি নিজের মোবাইল ফোন থেকে সর্বশেষ ঘটনার দিন দুপুর দেড়টার দিকে এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন কিন্তু তখন তিনি বাসায় ছিলেন।’