নিউজ ডেস্ক,বৃহস্পতিবার, ১ নভেম্বর ২০১৮;
ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বহুল আলোচিতক সংলাপ আজ। সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণে সংলাপে বসছেন দুই জোটের প্রধান নেতারা। দেশের ১৬ কোটি মানুষের চোখ আজ এ সংলাপের দিকে। কারণ একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে অনিশ্চয়তা, সংশয় ও দোলাচল কাটিয়ে সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ খুলে দিতে পারে এ সংলাপ।
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দশম জাতীয় নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে রাজনীতিবিদরা নিশ্চয় শিক্ষা নেবেন। নিশ্চয় একতরফা নির্বাচনের মতো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টির কোনো সুযোগ তারা কেউ কাউকে দেবেন না। বিশেষ করে কোনো ধরনের ‘দোহায়’ বা ‘শর্ত’ যেন সংলাপে বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রাজনীতিকদের উদারতা ও প্রজ্ঞা আশা করছেন রাজনীতি সচেতন মানুষ।
সংবিধানের দোহায় দিয়ে ক্ষমতাসীনরা সংসদ বহাল রেখে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যখন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনেরসহ ৭ দফা দাবি তুলেছে তখন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সে দাবিকে সংবিধানসম্মত নয় বলে নাকচ করে দিয়েছিলেন। অপরদিকে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলেছেন প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। সংবিধান সংশোধন ‘মাত্র এক মিনিটের ব্যাপার’।
বিএনপি যেহেতু জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সবচেয়ে বড় শরিক সেহেতু দুর্নীতির দায়ে কারারুদ্ধ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ারও মুক্তি দাবি করা হয়েছে ৭ দফায়। আওয়ামী লীগ বলছে, খালেদার রায় আদালত দিয়েছেন। এতে তাদের জাত নেই। আর বিএনপি বলছে খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই ফরমায়েশি এ রায় দেওয়া হয়েছে। এসব নিয়ে রাজনীতিতে যখন বাহাস তুঙ্গে ঠিক তখনই ড. কামালের একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতাসীনরা সংলাপের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের।
এ অবস্থায় দুপক্ষ থেকেই বলা হয়েছে, উদার মনোভঙ্গি নিয়ে তারা সংলাপে বসবেন। ঐক্যফ্রন্ট থেকে বলা হয়েছে সুষ্ঠু অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে সংলাপে যদি বিকল্প কোনো পথ বের হয়ে যায় তারা সেটাও মেনে নিতে রাজি আছেন। এ ক্ষেত্রে বিএনপিকেও যুক্তি ও অগ্রাধিকার বিবেচনা করে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের উপায় বের করতে হবে। কোনো ধরনের শর্তে যেন শান্তিপূর্ণ সমঝোতার পথ আটকে না দেয়।
এ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদের দায়িত্ব একটু বেশি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেকে বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর ‘সংবিধানসম্মত’ বিষয়ের বাইরেও জনস্বার্থে যদি বিকল্প পথ তৈরি হয় সেদিকে যেন তাদের মনোভঙ্গি ইতিবাচক থাকে। ক্ষমতাসীনরাও যেন সংবিধানের দোহায় দিয়ে নিজেদের অবস্থানে অনড় না থাকে সে প্রত্যাশাই সবার।