বিমান যাত্রার সময়ে টয়লেট ব্যবহার করেছেন কখনো? তাহলে জানেন নিশ্চয়ই, এসব টয়লেট হয়ে থাকে সচরাচর পাবলিক টয়লেটের মতোই। টয়লেট পরিষ্কারের ক্লিনারের গন্ধ ভুরভুর করতে থাকে জানালাবিহীন ছোট আকারের এসব টয়লেটে। কিন্তু কখনো ভেবেছেন কী, বিমানে টয়লেট করার পর তা কোথায় যায়?
বিমান আবিষ্কারের পর যখন তা পৃথিবীজুড়ে ব্যবহার হতে থাকে, তখন থেকেই বিমানে টয়লেট নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে যুদ্ধবিমানে এক ধরণের বালতি রাখা হতো, কিন্তু বিমানচালকরা তা মোটেই পছন্দ করতো না, কারণ বিমানে ঝাঁকুনি লাগলেই এসব বালতি উলটে পড়তো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বৈমানিক নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘ঝড়ো আবহাওয়ায় চলার সময়ে ওই বালতি অনেক সময়েই বিমানের মেঝেতে পড়ে যেত। এতে থাকা মল-মুত্র মেঝে, দেয়াল, ছাদে ছড়িয়ে পড়ত এবং বালতির ভেতরে আসলে খুব কমই অবশিষ্ট থাকত।’ এই বালতি ব্যবহারের ঝামেলা এড়াতে কিছু কিছু বৈমানিক বাক্সের ভেতরে কাজ সেরে তা বাইরে ফেলে দিতেন।
যাত্রীবাহী বিমানের প্রথম দিকের টয়লেটগুলো ছিলো বড় আকারে বাক্সের মতো। এতে প্রচুর পরিমাণে এক ধরনের নীল রাসায়নিক ব্যবহার করা হতো। আর এসব টয়লেট লিক করতো খুব ঘন ঘন। ১৯৭০ এর দশকে জেমস কেম্পার আধুনিক ভ্যাকুয়াম টয়লেট উদ্ভাবন করেন। তা প্রথম ব্যবহার হয় ১৯৮২ সালে এক বোয়িং বিমানে। এ টয়লেট এতই কার্যকরী যে পরে আর এতে তেমন পরিবর্তনের দরকার হয়নি।
কিন্তু এই টয়লেট ফ্লাশ করার পর কী হয়? তা কি আকাশেই বের করে দেওয়া হয়? না, আসলে বিমানের টয়লেটের বর্জ্য বিমানেই থেকে যায়। ফ্লাইট শেষ হলে পুরোটা একটি ট্রাকের পেছনে রাখা ট্যাঙ্কে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর এই ট্যাঙ্কের বর্জ্য সাধারণ বর্জ্যের মতোই ফেলে দেওয়া হয়।
মাঝে মাঝে অবশ্য অঘটন ঘটেই যায়। মাঝ-আকাশে টয়লেট লিক হয়ে সেই তরল জমাট বেঁধে বরফ আকারে নিচে পড়ার ঘটনা নতুন নয়। এমনকি এই বরফ একটি প্লেনের এঞ্জিনের ভেতরে ঢুকে দুর্ঘটনাও ঘটেছিল। তবে এগুলো সচরাচর ঘটে না। সুত্র: দ্যা টেলিগ্রাফ