নিজস্ব প্রতিবেদক,বৃহস্পতিবার,০৮ নভেম্বর ২০১৮:
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে ঘিরে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে সারাদেশে দলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সারাদেশে আবারো বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গণ গ্রেফতার করা হচ্ছে। দলটির অভিযোগ গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৭২ ঘন্টায় ২২ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ৮ নভেম্বর)দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সাথে সংলাপকালে কথা দিয়েছিলেন- ‘নতুন মামলা দেয়া হবে না, গ্রেফতার করা হবে না এবং প্রকৃত রাজবন্দীদের মুক্তির ব্যবস্থা করবেন’।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের কোনো বিশ্বাস মেলেনি। গত বুধবার সংলাপে প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্টের বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আমিও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত তিন দিন ধরে বিএনপি নেতাকর্মীদের চিরুনী অভিযান চালিয়ে ছেঁকে ধরা হয়েছে।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, জেলা-মহানগরের সভাপতি থেকে শুরু করে সাবেক এমপি কেউই সরকারের গ্রেফতার অভিযান থেকে রেহাই পাননি। এমনকি সমাবেশে আসা ও যাওয়ার পথে হাজারের অধিক নেতাকর্মী ও সাধারণ সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করার পর প্রথমে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হবে এই কথা বলে দর কষাকষি করা হয়েছে। অনেক নেতাকর্মীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েও ছাড়া হয়নি। এমনকি ৩০০ থেকে ৩৫০ জনের বড় বড় গ্রুপ করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি তল্লাশী ও পুলিশী হানাতে হাজার হাজার নেতাকর্মী ঘরবাড়ি ও এলাকা ছাড়া হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এইজন্য প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য!
রিজভী বলেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করার অঙ্গীকার করার পরও এতো তান্ডব, এতো পাইকারী গ্রেফতার! সরকার কি তাহলে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করেছে? প্রধানমন্ত্রী অতীতের মতো বলেন একটা, কিন্তু কাজ করেন অন্যটা।
তিনি বলেন, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁয় পুলিশের পক্ষ থেকে বাস মালিক সমিতিকে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে-কেউ যেন রাজশাহীতে ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় যোগ দিতে যাওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের গাড়িভাড়া না দেয়। ইতোমধ্যে বৃহত্তর রাজশাহী জেলায় আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে শুরু করে আগামীকাল (শুক্রবার) বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাস ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
রিজভী বলেন, গত মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে জনসভাকে কেন্দ্র করে জনসভার আগের দিন ও জনসভার দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী দলীয় আট শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এপর্যন্ত (বৃহস্পতিবার) দেশব্যাপী ২২০০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আমি দলের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তাদের নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগরী সহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের তালিকা তুলে ধরেন রিজভী।