নিউজ ডেস্ক,বুধবার,১৪ নভেম্বর ২০১৮:
সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। তৃতীয় দিনেও উৎসবের আমেজে বিএনপি নেতাকর্মীরা দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনছিলেন। বুধবার ঘড়ির কাঁটায় সময় তখন প্রায় দুপুর পৌনে ১টা। হঠাৎ করেই দৃশ্যপট পরির্বতন হয়ে যায় সরগরম নয়াপল্টনে। বিএনপি অফিসের সামনে সড়ক বন্ধ করে জোড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের সরাতে যায় পুলিশ। তাকে বাঁধ সাধে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
পুলিশ নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের ওপর চড়াও হয় নেতাকর্মীরা। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা কয়েকজন পুলিশের ওপর হামলা চালায়। শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্তত ৭০-৮০ রাউন্ড টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ছুঁড়ে। থেমে থেমে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এই সংঘর্ষ। এসময় পুশিলের দুটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। কিছু মোটরসাইকেল, গাড়ি ভাঙচুরও করা হয়।
সংঘর্ষের সময় বিএনপির বেশকিছু নেতাকর্মী আহত হন। গুলিবিদ্ধ হন কেউ কেউ। তাদের চিকিৎসা দিতে বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
মহিলা দলের ঢাকা মহানগরের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদিকা নিলুফা ইয়াসমিন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলাম। আজকে সকাল থেকেই পুলিশ আমাদেরকে নানাভাবে উস্কানি দিয়ে আসছে। এমন অবস্থায় দুপুরের দিকে তারা হঠাৎ করেই আমাদের ওপর চড়াও হয়।’
মহিলা দলের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আহত মুকুল আক্তার কনা বলেন, ‘আমরা কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। পুলিশ বিনা উস্কানিতে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।’
পরিবেশ কিছুটা শান্ত হলে দুপুর ২টায় বিএনপি অফিসের নিচে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিনা উস্কানিতে সরকারের লেলিয়ে দেয়া পুলিশবাহিনী অতর্কিতভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।’
আপনারা মৌচাকে ঢিল মেরেছেন কেন? পুলিশ বাহিনীর কাছে এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘আপনারা ভেবেছেন আমাদের শান্তিপূর্ণ এই মনোনয়ন ফরম বিক্রয় করার সময় হামলা চালিয়ে আমাদের স্বাভাবিক কাজ বন্ধ করবেন। সেটি আর হবে না। কোনও রক্তচক্ষুকে শহীদ জিয়ার সৈনিকেরা ভয় করে না।’
এই আক্রমণ সরকারের নির্দেশে- এমন দাবি করে রিজভী নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সরকারের নির্দেশেই আমাদের নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত করেছে সরকারের লেলিয়ে দেয়া পুলিশ বাহিনী।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের গুলি করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ।’
এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নির্দেশে নেতাকর্মীদের ফুটপাতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান রিজভী।
এ প্রতিবেদন লিখার সময় রাজধানীর ফকিরাপুল থেকে নাইটেঙ্গেল মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুপাশ দখলে নিয়ে অবস্থান করছে ছাত্রদল, যুবদল, মহিলাদলসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী। শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা। অন্যদিকে কিছুটা পিছিয়ে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ,র্যাব।