নিউজ ডেস্ক,মঙ্গলবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮:
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে লড়বেন এক হাজার ৮৪১ প্রার্থী। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে ৯৬ জন। সারাদেশ থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন পরিচালনা শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
রবিবার (৯ ডিসেম্বর) ছিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। গত ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত মোট তিন হাজার ৬৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এর মধ্যে আগামী ৩০ ডিসেম্বরের ভোটের লড়াইয়ের জন্য এই এক হাজার ৮৪১ প্রার্থী টিকলেন। বাকিদের মধ্যে কারও মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করেছে ইসি। কেউ কেউ আবার নিজেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এবার ১৯ দিন প্রচার কাজ চালানোর জন্য সময় পাচ্ছেন প্রার্থীরা। কেননা, প্রচার কাজ বন্ধ করতে হবে ২৮ ডিসেম্বর রাত ১২টায়। এবার নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় পার্টির সবচেয়ে বেশি প্রার্থী দিয়েছে।
ইতোমধ্যে গতকাল প্রার্থিদের প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচনের জন্য ৬৪টি প্রতীক সংরক্ষণ করেছে। এর মধ্যে ৩৯টি নিবন্ধিত দলকে দলীয় প্রতীক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের আলাদা প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, প্রতীক পেয়েই প্রার্থিরা নির্বাচনী প্রচারণায় আনুষ্ঠানিকভাবে নামতে পারেন। দেশের বিভিন্ন আসন থেকে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, প্রতীক পেয়ে প্রার্থীরা এলাকায় নেমে পড়েছেন। অনেকে পোস্টারও টানানো শুরু করেছেন।
এদিকে, তিনশ’ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৫৮ জন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। বাকি ৪২টি মহাজোটের শরিকদের জন্য ছেড়ে দিয়েছে দলটি। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি ২৬টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ৫, জাসদ (ইনু) ৩টি, তরিকত ফেডারেশন ২টি, জেপি ২টি, জাসদ (আম্বিয়া) ১টি ও যুক্তফ্রন্টকে ৩টি আসনে ছাড় দেয়া হয়। তবে মহাজোটের বাইরে গিয়ে জাতীয় পার্টি ১৪৮টি আসনে এককভাবে নির্বাচন করছে।
বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সারা দেশে মোট ২৯৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
তাদের মধ্যে ২৪২ জন বিএনপির দলীয় প্রার্থী, ১৯ জন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ও ৩৭ জন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী। তবে ২০ দলের অন্যতম শরিক এলডিপির অলি আহমদ নিজ দলের প্রতীক ‘ছাতা’ নিয়ে ভোটে লড়বেন।
ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে গণফোরামকে ৭টি, জেএসডিকে ৪টি, নাগরিক ঐক্যকে ৪টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগকে ৩টি আসন ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ বিএনপির জাতীয় ঐক্যফ্রন্টভুক্ত শরিক দলগুলো ১৯টি আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়েই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
অন্যদিকে ২০ দলীয় জোট শরিকদের মধ্যে এলডিপিকে ৫টি, খেলাফত মজলিশকে ২টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ৩টি, জাতীয় পার্টিকে (কাজী জাফর) ২টি, বিজেপিকে ১টি, কল্যাণ পার্টিকে ১টি, এনপিপিকে ১টি, লেবার পার্টিকে ১টি, পিপিবিকে ১টি করে আসন ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ নভেরের মধ্যে ৩ হাজার ৬৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাছাইয়ে বাদ পড়েছে ৭৮৬টি, বৈধ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র রয়েছে ২ হাজার ২৭৯টি। শেষ পর্যন্ত আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে লড়বেন এক হাজার ৮৪১ প্রার্থী। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে ৯৬ জন। বাকিদের মধ্যে কারও মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করেছে ইসি। কেউ আবার নিজেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।
তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ৯ ডিসেম্বর ছিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর থেকে প্রার্থী ও তার সমর্থকরা নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন।