নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার,২১ ডিসেম্বর ২০১৮:
আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচন ইতোমধ্যে একটি তামাশায় পরিণত হয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা অবাক বিষ্ময়ে লক্ষ্য করছি নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এমনকি বিচার বিভাগ বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধংস করার জন্য আজকে একজোট হয়েছে। আজকে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আদৌ নির্বাচন হওয়ার মতো কোনো অবস্থা আছে কি না।
শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, অবিশ্বাস্য পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে যাতে কোনো মতেই একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আর মাত্র ৬ দিন বাকী। আমরা আশা করছি এ ৬/৭ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন শেষ মুহূর্তে সম্বিত ফিরে পাবে। এ নির্বাচনে জড়িত আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী সর্বপরি সেনাবাহিনী সবাই দায়িত্ববোধ ও কর্তব্যবোধ নিয়ে কাজ করবেন।
বিচার বিভাগ পক্ষপাত করছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের কাছে মনে হচ্ছে বিচার বিভাগ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের প্রার্থীদের বাতিল করছে।
সিলেট -২ আসনের প্রার্থী তাহসীনা রুশদীর লুনা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি তিন বছর আগে কেন পদত্যাগ করেননি সেজন্য মনোনয়ন বাতিল করেছে। অথচ ড. এনামুল হক সরকার জৈন্তাপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে থাকলেও তার মনোনয়ন বাতিল হয়নি। লুনাকে নির্বাচন কমিশন বাতিল করেনি বলেও জানান তিনি। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে পদত্যাগ করার প্রয়োজন নেই। নির্বাচিত হওয়ার পর পদত্যাগ করলেই হবে। এখন হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে সেটাকে আমরা কি বলবো। আমার দলের প্রার্থী কে হবে সেটাও হাইকোর্ট বলে দিচ্ছে। তাহলে সেই হাইকোর্টকে কিভাবে বিশ্বাস করবো।
আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছি যেসব আসনে আমাদের প্রার্থীকে বৈধ করা হয়েছে তারপরে হাইকোর্টের কোনো এখতিয়ার আছে কি না তা বাতিল করার।
প্রধানমন্ত্রী সংলাপে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তফসিল ঘোষণার পর আর গ্রেফতার করা হবে না। কিন্তু গ্রেফতার ও মামলা বৃদ্ধি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, আমাদের ১৫ জন প্রার্থী কারাগারে, ৭ জন বাতিল, ২৫ জন আদালতে ঝুলছে। ২০১৪ সালে ১৫৪ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার সেটা পারেনি। তাই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে একের পর এক প্রার্থী বাতিল করছে।
‘লন্ডন থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যা করা হবে’, প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যকে ভয়াবহ মিথ্যা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন করতে চাই বলেই নির্বাচনে এসেছি। উচ্চ আদালতের কাছে দাবি করছি ন্যায় বিচার করুন। বেআইনিভাবে বিরোধী দলের প্রার্থীদের বাতিল করবেন না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন।