মো: নাহিদ মিয়া | রবিবার,২০ জানুয়ারি ২০১৯:
সারি সারি সুবজ গাছের বিচরন শেষে তিনতলা ভবন। অনেক যত্ন নিয়ে তৈরি হলেও, অব্যবহৃত ভবনটিজুড়ে নিতেজ-নিরবতা। তবে তৈরি হয়েছিলো অর্থোপেডিক সমস্যা নিয়ে জর্জরিত অসহায় মানুষের সেবায়। সুবিধাভোগী হবেন প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জের কৃষকসহ সব ধরনের মানুষ।
পাশাপাশি ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ঘিরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীরা অন্তত সেবা পাবেন, একটু সহজেই। দীর্ঘ প্রত্যাশার পর ধামরাইয়ে ৬ বছর আগে আলোর নতুন দিগন্ত নিয়ে অর্থোপেডিকের এই ট্রমা সেন্টারটির অবকাঠামোগত কাজ প্রায় শেষ হয়। কিন্তু উদ্বোধন যেন সোনার হরিন। অবকাঠামোগত কাজ শেষ, তবে নির্মান কাজও শেষের দিকে। এরমধ্যে অর্ধ যুগে পা দিয়েছে সেবার ভবনটি। এরপর আর কোন উদ্যোগ নেই। একে একে ৬ টি বছর। শুরু হয়নি কাঙ্খিতে এই সেবার সেন্টার। ধামরাইয়ের আদি জনপথের মানুষরা দ্রুত চালু করার দাবী করেন সংশ্লিষ্টদের কাছে।
অনেক সময় বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের খবর শুনতে হয়।রোগী আছে, চিকিৎসক নেই, রোগী আছে বেড নেই, নেই কোন ওষুধ। এ যেন উল্টো খবর, ভবন আছে ও বেড আছে। কিন্তু ডাক্তার ও রোগীর দেখা নাই। সবাইকে নিরাশ করে, কষ্টের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে, ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশেই দীর্ঘ ৬ বছর ধরে পড়ে আছে অর্থোপেডিক ট্রমা সেন্টার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ট্রমা সেন্টারটি চেয়ে আছে ভুক্তভোগী রোগীর অপেক্ষায়, কিন্তু নেই কোন রোগী। কারন ভবন থাকলেও মিলছে না চিকিৎসা। ভবনটি নতুন হবার সত্বেও দেখে মনে হয় পুরনো পরিত্যক্ত ভবন। ভবনের চারপাশের দেয়ালে রঙ চটা হয়ে আছে, জানালার গ্লাসগুলো ভেঙ্গে খসে খসে পড়ছে, ময়লায় আবর্জনায় নোংরা, বখাটে যুবকদের আড্ডার একটি আস্তানা, যেখানে চলে অনেক অনৈতিক কর্মকান্ড। ভিতরে মাকড়সার বাসায় পরিপূর্ণ দেখে মনে হয় ভূতুরে পুরনো প্রাসাধ।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্তরে প্রায় ৬ বছর আগে ২০ শয্যার ৩ য় তলা ভবনের এই অর্থোপেডিক হাসপাতাল ট্রামা সেন্টারটির অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। দূর্ঘটনা-প্রবন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দূর্ঘটনায় আহত রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ট্রমা সেন্টারটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু নির্মাণ কাজ ৬ বছর আগে শেষ হলেও এখনও উদ্ধোধনসহ জনবল নিয়োগ না হওয়ায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীসহ স্থানীয়রা।
এদিকে, ট্রমা সেন্টারটি উদ্ধোধনের বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগযোগ করা হচ্ছে জানিয়ে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফজলুল হক জানান, ৩৯ তম বিসিএসের নিয়োগ শেষ হলে ট্রমা সেন্টারটির জন্য জনবল নিয়োগ শুরু করা সম্ভব হবে। এবং এই সেন্টারটি চালু হলে শুধু ধামরাই নয়, আশপাশের কয়েকটি উপজেলার মানুষও অল্প খরচে আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে।
তাই, অতি দ্রুত ট্রমা সেন্টারটি উদ্ধোধন শেষে জনবল নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। জনবল না থাকলে, কেনই ট্রমার সেন্টার এতো আগে তৈরি হলেও সে প্রশ্নও অজানা।