ভারত ডেস্ক | বৃহস্পতিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯:
বাংলাদেশসহ প্রতিবেশি দেশগুলো থেকে যাওয়া অমুসলিমদের ভারতের নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৯ এবং তিন তালাকের বিষয়ে দ্য মুসলিম উওমেন (প্রটেকশান অব রাইটস অন ম্যারেজ) বিল, ২০১৮ সংসদে বাতিল হয়ে গেছে। এই সংসদের উচ্চকক্ষে এই বিতর্কিত দুইটি বিলই বাতিল হওয়ায় ক্ষোভ ও ভীষণ বিরক্ত প্রকাশ করেছেন আসামের অর্থমন্ত্রী ও সিনিয়র বিজেপি নেতা হিমান্ত বিশ্বশর্মা।
রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব বিল পাস না হওয়া আসামের জন্য পরাজয় দাবি করে বিজেপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘এই বিল পাস না হওয়ায় আসামে যে ১৭টি আসন আছে তাতে বিজয়ী হবেন (কথিত) বাংলাদেশি মুসলিমরা।’ বুধবার তার কণ্ঠে এমন ক্ষোভ ঝরে পড়ে। এর মধ্য দিয়ে তিনি আসামে বসবাসকারী মুসলিমদের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তাদের দাবি, এরা কথিত বাংলাদেশী মুসলিম। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নর্থ ইস্ট ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক বিশ্বশর্মা বলেছেন, ‘আমার দল এ বিলটিকে সমর্থন করে। বিজেপি অঙ্গীকারাবদ্ধ। এর প্রতি চিরদিন অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকবে। এই প্রতিশ্রুতিতে নির্বাচনে লড়াই করবে বিজেপি।’
হিমান্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, ‘আমি মনে করি রাজ্যসভায় বিলটি পাস না করার অর্থ হলো আসামের পরাজয়। এখন আসামের নাগরিকদের কে রক্ষা করবেন? এখন রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই এনডিএ সরকারের। তাই তারা বিলটি আবার উত্থাপন করতে পারছে না। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট যদি আবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তাহলে বিলটি আবার তোলা হবে।’
গত মাসে নাগরিকত্ব বিষয়ক ওই বিলটি লোকসভা পাস করে। এরপর মঙ্গলবার বিলটি তোলার কথা ছিল উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায়। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের আগে এটিই ছিল রাজ্যসভার শেষ অধিবেশন। এদিন বিরোধীদের তীব্র বিরোধিতায় বিলটি উত্থাপন করা যায়নি। ফলে নির্বাচনের আগে বুধবার পার্লামেন্টের শেষ অধিবেশনে বিলটি অনুমোদন পেল না। ফলে বিলটি মৃত অবস্থায় রয়ে গেল।
এর আগে গত ৮ জানুয়ারিতে লোকসভায় পাস হয়েছিল বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেয়া অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্বের প্রস্তাব সম্বলিত এই সংশোধনী বিল। সঙ্গে সঙ্গেই তা উত্তেজনা ছড়িয়েছিল উত্তর-পূর্ব ভারতে। অমুসলিম শরণার্থীদের তালিকায় আছেন হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, শিখ এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষরাও। বিলের আওতায় প্রতিবেশী দেশগুলোতে ধর্মীয় সহিংসতার শিকার হয়ে কেউ ভারতে থাকার আবেদন করলে নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ সুগম রাখা হয়েছে।