নিউজ ডেস্ক | শুক্রবার,২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯:
অধিকাংশ দলের বর্জনে ভোটার খরায় নিষ্প্রাণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচন। এ নির্বাচনে ডিএনসিসির মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। ৫৪টি ওয়ার্ডের ১২৯৫টি কেন্দ্রের মধ্য থেকে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৬৪৫টি কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে আতিকুল ইসলাম পেয়েছেন ৩ লাখ ৪ হাজার ৫৪ ভোট।
অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙল মার্কার মেয়র প্রার্থী শাফিন আহমেদ পেয়েছেন ১১ হাজার ৮৬৮ ভোট। বেসরকারিভাবে বিজয়ী আতিকুলই স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের চেয়ারে। পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সম্প্রসারিত ৩৬ ওয়ার্ডে বিজয়ী কাউন্সিলরদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। ডিএনসিসিতে মোট ভোটার রয়েছেন ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল অপ্রত্যাশিত কম। অধিকাংশ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের দুপুর পর্যন্ত অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন সকালে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। যদিও দুপুরের পরেও ভোটারদের উল্লেখযোগ্য ও আগ্রহপূর্ণ উপস্থিতি চোখে পড়েনি। তবে শেষ কয়েক ঘণ্টা কিছু কিছু কেন্দ্রে ভোটারদের ছোটখাটো লাইন চোখে পড়েছে। কোথাও কোথাও গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে ভোটার উপস্থিতি বোঝানোর জন্য দলীয় কর্মীদের দিয়ে কৃত্রিম ভোটার লাইন তৈরি করেছে সরকারদলীয় কর্মীরা।
সরজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর পদপ্রার্থী থাকায় সম্প্রসারিত ওয়ার্ডগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য ওয়ার্ডে শুধু ভোটার নয় কোথাও কোথাও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদেরও চোখে পড়েনি। জানা গেছে, অনেক কেন্দ্রে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আতিকুল ও শাফিনের কোনো এজেন্টই ছিল না। এমনই পরিবেশে শান্তিপূর্ণ ও নিরুত্তাপভাবে সম্পন্ন হয়েছে ভোটগ্রহণ। ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সংশয়ের মধ্যেই ইসির সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ গতকাল সন্ধ্যায় জানিয়েছেন, অন্তত ৫০ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন।
অপরদিকে গতকাল সকালে উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরে নিজ কেন্দ্র আইইএস উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভোট দিতে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা মন্তব্য করেছেন, নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির কম হওয়ার দায় রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরদের নিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের কাজ সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া। আর ভোটার নিয়ে আসার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলো কিংবা প্রার্থীদের। অবশ্য স্বল্প সময়ের জন্য ভোট হওয়া এবং সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ না থাকায় ভোটার সংখ্যা কম হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ইসি যেখানে ভোট দিয়েছেন সেখানে একসঙ্গে তিনটি কেন্দ্রে ভোটার ছিল ৮ হাজার ৬৭৯টি। সকাল ১০টা পর্যন্ত সেখানে ভোট পড়ে মাত্র ৫১টি।
ভোটারদের ভোটদানে অনুৎসাহের কারণ হিসেবে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হওয়ার কথা বলেছেন খোদ ইসি মাহবুব তালুকদারও। তিনি বলেছেন, ‘রাজনৈতিক পরিচয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে প্রধান বিরোধী দলগুলো অংশ না নেওয়ায় এটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নয়।
নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে তাতে ভোটারদের ভোট দিতে যেতে উৎসাহ দেখা যায় না।’ তিনি এ নির্বাচনকে অপূর্ণাঙ্গ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘এই নির্বাচন পাঁচ বছর পর পর হবে। তবে এখন যারা নির্বাচিত হবেন তারা মাত্র এক বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। তাই আমি এই নির্বাচনকে অপূর্ণাঙ্গ বলছি।’
ভোটারদের আশানুরূপ উপস্থিতি দেখা না গেলেও সরকারদলীয় মন্ত্রী-এমপিরা অবশ্য ভোটকেন্দ্রে ভিড় দেখেছেন বলে দাবি করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গতকাল দুপুরে মানিকমিয়া এভিনিউয়ের রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ভোটাররা ভোট দেওয়ার উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন এটা ঠিক নয়। সব জায়গাতেই ভোটারদের প্রচ- ভিড়। সুন্দরভাবে ভোট হচ্ছে।’
আতিকুলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শাফিন আহমেদ অবশ্য কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘুরেও ভোটার দেখতে পাননি বলে জানিয়েছেন। সকালে গুলশানে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোটদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে ঘুরছি। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘুরেও ভোটারদের দেখা পাইনি।’ এর কারণ হিসেবে শাফিন জানান, ‘গত বেশ কয়েকটা নির্বাচনে এত অনিয়ম হয়েছে যে, ভোটাররা নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ভোটাররা মনে করেন তাদের ভোটের কোনো মূল্য নেই।’
এর আগে, সকাল ৯টার দিকে উত্তরার আজমপুর এলাকার নওয়াব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বের হয়ে মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি গরম চা ও খিচুড়ি খেয়ে ভোটারদের ভোট দিতে যাওয়ার আহ্বান জানান।
ডিএনসিসির উপনির্বাচন এবং উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সম্প্রসারিত ৩৬টি ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে মোট প্রার্থী সংখ্যা ছিল ৩৮২ জন। এর মধ্যে মেয়র পদে পাঁচজন। তারা হলেন-নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম, লাঙল প্রতীকে জাতীয় পার্টি থেকে শাফিন আহমেদ, বাঘ প্রতীক নিয়ে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) থেকে শাহিন খান, আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনিসুর রহমান দেওয়ান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নর্থ সাউথ প্রপার্টিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহিমের প্রতীক টেবিল ঘড়ি।
দুই সিটিতে ৩৬টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিল পদে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৩১০ জন। উত্তর দক্ষিণ সিটিতে ৬টি করে ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিল পদে প্রার্থীর সংখ্যা ৬৯ জন। এর মধ্যে ডিএনসিসির ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১৬ জন, সমসংখ্যক ওয়ার্ডে ডিএসসিসিতে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১২৫ জন। অন্যদিকে ডিএনসিসির ৬ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪৫ জন এবং ডিএসসিসিতে ২৪ জন।
কেমন ছিল ভোটের দিন
রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬টি কেন্দ্রেই সকাল ৯টার দিকে দেখা গেছে অলস সময় পার করেছিলেন এখানকার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা। গতকাল সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হলেও এখানকার অধিকাংশ কেন্দ্রেই নৌকার এজেন্ট আসেন সকাল ৯টা বা তার একটু আগে।
এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিনটি কেন্দ্রে সকাল ৯টা পর্যন্ত কোনো ভোট পড়েনি বলে জানান প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা।
ভোটার না থাকায় এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কক্ষে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের খোশগল্পে মশগুল থাকতে দেখা গেছে। তাদের সঙ্গে অলস সময় কাটিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও। এখানকার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা মাহফুজুল হক মৃধা বলেন, ‘ভোটার উপস্থিতি কম। বৃষ্টি তো, আর আমার এখানে মহিলা ভোটার। তারা হয়তো রান্নাবান্না করে আসবেন।’ এ স্কুলের ৪১৩ ও ৪১৪ নম্বর কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিলেন ৪ হাজার ৪৯ জন। প্রথম ঘণ্টায় এ দুই কেন্দ্রে কেউ ভোট দেননি; ব্যালট বাক্সগুলো ছিল ফাঁকা। এ স্কুলের আরেকটি কেন্দ্রেও সকাল ৯টা পর্যন্ত কোনো ভোট পড়েনি; সেখানে ভোটার ছিলেন ১ হাজার ৯২০ জন।
ঢাকা উত্তরের নানা প্রান্তের বিভিন্ন কেন্দ্র সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোটারশূন্য অবস্থায় দেখা যায়। মহাখালীর টিঅ্যান্ডটি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন নম্বর কেন্দ্রের ২ নম্বর বুথে বেলা ১১টা পর্যন্ত ভোট পড়েছিল মাত্র একটি। মেয়র পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ভোট দেন উত্তরার নবাব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে। ওই স্কুলের চারটি কেন্দ্রের মধ্যে দুটিতে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ভোট পড়ে মাত্র দুটি। আতিকুল যখন কেন্দ্রে এলেন তখন সংবাদকর্মী, নির্বাচন কর্মকর্তা আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভিড় দেখা গেলেও ভোটার ছিলেন হাতেগোনা। সকাল ১০টা পর্যন্ত আতিকুলের কেন্দ্রে মোট ৫০টি ভোট পড়ে বলে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ডা. প্রদীপ কুমার বিশ্বাস তথ্য দেন।
সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং উত্তর ও দক্ষিণের ১৮টি করে ৩৬টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর এবং ১২টি নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়। পাশাপাশি ঢাকা উত্তরে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণও চলে।
সকালে প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা পরে ভোটার উপস্থিতির আশা করলেও বেলা বাড়ার পরও অন্য নির্বাচনের তুলনায় ভোটার সংখ্যা ছিল নগণ্য। কয়েকটি কেন্দ্রে দুপুরে ভোটারহীন দেখার পর প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা বলেন, সকালেই ভোটাররা ভোট দিয়ে গেছেন। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদেও ভোট ছিল বলে মেরুল বাড্ডা নিউ নেশন আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্রের বাইরে প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের ভিড় দেখা গেলেও সকাল ১০টার সময়ও ভেতরে ভোটার ছিল কম। মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিলেন ৩ হাজার ৭২০ জন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সেখানে ২০টি ভোট পড়ে বলে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আলী আকবর জানান। মোহাম্মদপুর কিশোলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের নারী কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, সেখানে ৩ হাজার ৬৯৩ ভোটারের মধ্যে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ২৬ জন ভোট দিয়েছিলেন। ওই স্কুলে বসানো পুরুষদের কেন্দ্রের ৩ হাজার ৮৮২ জন ভোটারের মধ্যে ওই সময় পর্যন্ত ২৯৭ জন ভোট দেন। ঢাকা উত্তরে গুলশানের মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ছিল চারটি কেন্দ্র। নারীদের দুটি কেন্দ্রে ভোটার ছিলেন যথাক্রমে ২ হাজার ৮৬ এবং ২ হাজার ১০৮ জন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত নারীদের দুটি কেন্দ্রে ১৫০ ও ৬৩০টি ভোট পড়ে বলে জানান প্রিজাইডিং কর্মকর্তা প্রমোদ নাথ সাহা। সেখানে পুরুষদের একটি কেন্দ্রে ২ হাজার ৫৯৮ ভোটের মধ্যে ৪৫০টি পড়ে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। আর অন্য কেন্দ্রে ২ হাজার ৪৮৬ জন ভোটারের মধ্যে তখন পর্যন্ত ভোট দিয়েছিলেন ৩৫০ জন।
বনশ্রীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে দুপুর ২টায় গিয়ে কোনো ভোটার দেখা যায়নি। সেখানে চারটি কেন্দ্র ছিল একেবারে ফাঁকা। বাইরে থেকে বোঝায় উপায় ছিল না সেখানে কোনো ভোট চলছে। ভোট কেন্দ্রের ভবনের দোতলায় প্রবেশ করতেই দেখা যায় ভোট গ্রহণের সব আয়োজন। নির্বাচনী কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে নৌকা প্রতীকের এজেন্ট ও কয়েকজন সমর্থক ছাড়া কোনো ভোটার দেখা যায়নি তখন।
মগবাজারের শাহনূরী মডেল হাইস্কুল কেন্দ্রটি দুপুর আড়াইটায় ছিল ভোটারশূন্য। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর কয়েকজন ভোটার কেন্দ্রে আসেন ভোট দিতে। ওই সময় কেন্দ্রটিতে এক হাজার ৩৩টি ভোটের মধ্যে ২২ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানান প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মামুন খান।
তবে কিছুটা ভিন্ন চিত্র ছিল মেয়র পদে উপনির্বাচনের পাশাপাশি নতুন ওয়ার্ডগুলোর কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের কেন্দ্রগুলোর চিত্র। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নবগঠিত ৫১ নম্বর ওয়ার্ডে মেয়র পদে উপনির্বাচন ছাড়াও নতুন করে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ভোট ছিল। কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকায় এ ওয়ার্ডের কেন্দ্রগুলোর চিত্র ছিল কিছুটা ভিন্ন।
উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৯ নম্বর রোডের উত্তরা ল্যাবরেটরি হাইস্কুলে ছিল নারী ও পুরুষের দুটি কেন্দ্র। বেলা সাড়ে ১১টায় এই দুই কেন্দ্রের ১৬টি বুথে কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্টদের উপস্থিতি থাকলেও নৌকার দুই বুথে দুজন এজেন্ট ছাড়া অন্য কোনো মেয়র প্রার্থীর এজেন্ট পাওয়া যায়নি। নারী ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ বলেন, তার কেন্দ্রে ভোটের প্রথম সাড়ে তিন ঘণ্টায় ১০ শতাংশ ভোট হয়েছে।
একই বিদ্যালয়ে পুরুষ ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সোয়ায়েব সাঈদ বলেন, তার কেন্দ্রের তিন হাজার ২০৯ জন ভোটারের মধ্যে ভোট শুরুর প্রথম সাড়ে তিন ঘণ্টায় ২৪০ জন ভোট দেন। কাউন্সিলর পদের প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও এই দুই কেন্দ্রে কোনো লাইন ধরে ভোট দেওয়ার চিত্র চোখে পড়েনি। এক-দুজন করে ভোটার এসে ভোট দিয়েছেন। উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডে ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের দুটি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হয়। কাউন্সিলর পদে প্রার্থী থাকায় এই কেন্দ্রের চিত্রও ছিল উত্তরা ল্যাবরেটরি হাইস্কুল কেন্দ্রের মতো। এই দুই ভোটকেন্দ্রে এক-দুজন করে ভোটার এসে ভোট দিয়েছেন। সবপদে প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও লাইন ধরে ভোট দিতে দেখা যায়নি