নিউজ ডেস্ক | শুক্রবার,২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯:
লেখক ও প্রকাশকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অমর একুশে বইমেলার সময় বাড়ানো হয়েছে দুদিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বাড়ানো হয়েছে এ সময়। ফলে বইমেলা চলবে আজ শুক্রবার ও কাল শনিবার পর্যন্ত। সময় বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ফয়সল হাসান।
২১ ফেব্রুয়ারিতে চকবাজার ট্র্যাজেডি, মেলার শেষদিকে এসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ায় প্রকাশকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব কারণে তাদের দাবি ছিল সময় বাড়ানোর। এতে সায় ছিল লেখকদেরও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে উভয় শ্রেণিই ছিল সোচ্চার। অন্যদিকে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ এ আবেদনে সায় দেয়নি।
গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। তিনি বলেন, মেলার শেষ মুহূর্তে আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রকাশকদের যে ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি করেছে সে জন্য আমরা সমবেদনা ও দুঃখ প্রকাশ করছি। এ দুর্যোগ আবারও প্রমাণ করেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা আয়োজনের জন্য স্থায়ী মেলা মাঠ বরাদ্দের কোনো বিকল্প নেই, যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধের সার্বিক ব্যবস্থা থাকবে। ‘সমাপনী’ এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। পরে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপে মেলার সময় বাড়ানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মেলার শেষদিনে দুপুর ২টা থেকেই প্রবেশপথে ছিল দীর্ঘ লাইন। গত বুধবার যারা বই কিনতে এসে বৃষ্টির কারণে কিনতে পারেননি তাদের অনেকেই এসেছেন গতকাল, শেষ মুহূর্তে সংগ্রহ করেছেন পছন্দের বই। বেলা ২টার পরে আবার বৃষ্টি হানা দেওয়ার চেষ্টা করলেও বইপ্রেমীরা অগ্রাহ্য করেছে সে বাধা। ছিল বইপ্রেমীদের ঢল। ‘শেষ দিনে’র বিকিকিনিতে ক্রেতা আকৃষ্ট করতে কোনো কোনো স্টলে দেওয়া হয়েছে বিশেষ ছাড়।
গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে ১৫৩টি। পুরো ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৪,৬৮৫টি। এ বছরও প্রকাশের শীর্ষে ছিল কবিতা। কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে ১৫৫৫টি। ৭৩২টি গল্পগ্রন্থ ও ৬৮২টি উপন্যাস।
গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার ঘোষণা : ২০১৮ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিকসংখ্যক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য কথাপ্রকাশকে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০১৯, ২০১৮ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে গুণমান ও শৈল্পিক বিচারে সেরা গ্রন্থ বিভাগে গোলাম মুরশিদের বিদ্রোহী রণক্লান্ত : নজরুল-জীবনী গ্রন্থের জন্য প্রথমা প্রকাশনকে, মঈনুদ্দীন খালেদের মনোরথে শিল্পের পথে গ্রন্থের জন্য জার্নিম্যান বুক্সকে এবং মারুফুল ইসলামের মুঠোর ভেতর রোদ গ্রন্থের জন্য চন্দ্রাবতী একাডেমিকে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০১৯ প্রদান করা হয়। ২০১৮ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেডকে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার-২০১৯ এবং ২০১৯ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মধ্যমা (এক ইউনিট), বাতিঘর (বহু ইউনিট), পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সকে (প্যাভেলিয়ন) শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার ২০১৯ প্রদান করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রকাশকদের পঁচিশ হাজার টাকার চেক, সনদ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।