লাইফস্টাইল ডেস্ক :
হাল্কা গা গরম ভাব আর চোখ জ্বালাও করে হঠাৎই জ্বর। এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন যেকোনো সময়। ব্যস্ততার মধ্যে এরকমটা হলে সেটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কী করলে জ্বর কমবে তা ভাবতে ভাবতেই হয়তো খেয়ে ফেলেন গোটা কয়েক ওষুধ, যা একদমই অনুচিত। বরং হঠাৎ জ্বর এলে তা কমানোর কিছু উপায় মেনে চলতে হবে।
জ্বরের কারণ
জ্বর কোনো রোগ নয়, রোগের অন্যতম উপসর্গ। আমাদের শরীরের সাধারণ তাপমাত্রা থাকে ৯৮ ডিগ্রী ফারেনহাইটের মতো। কিন্তু এর থেকে যখন সামান্য তাপমাত্রা বাড়ে, অর্থাৎ ১০০ অতিক্রম করে তখন তা সামান্য জ্বরের ইঙ্গিত নিয়ে আসে। অবশ্য সেটি নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। জ্বর যখন ১০৩ এর কাছাকাছি যায় তখন তা মাঝারি জ্বর হিসেবে ধরা হয়। তার উপরে গেলে তা উচ্চ জ্বর আর তখনই সাবধান হওয়া দরকার হয়ে পড়ে।
*জ্বর অনেক সময়ে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার একটা মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। যদি কোনো ব্যাকটেরিয়াল আক্রমণ হয়, তখন শরীর হয়তো তাপমাত্রা বাড়িয়ে তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। শরীর তখন রক্তে অ্যান্টি ভাইরাল উপাদান তৈরি করতে থাকে।
*অন্যান্য রোগ, যেমন ইনফ্লুয়েঞ্জা, ম্যালেরিয়ার মতো রোগের সময়েও জ্বর হয়।
*দীর্ঘ দিন ধরে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক নিতে থাকলে তা থেকেও জ্বর আসতে পারে।
*সদ্য কোনো অপারেশন থেকে উঠলে বা হার্ট অ্যাটাকের মতো সমস্যার পরেও জ্বর হয়।
*কোনো সময়ে গভীর মানসিক আঘাত পেলে তার থেকেও মাঝে মাঝে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসতে পারে।
জ্বর হলে কী করবেন?
জ্বর এলে অনেকেই হুটহাট নিজের সিদ্ধান্তে ওষুধ খেয়ে নেন। যা একদমই উচিৎ নয়।
*জ্বরের সময়ে প্রধান চিকিৎসা হলো তরল খাবার খাওয়া। যদি অফিসে থাকেন তাহলে জ্বর আসছে বুঝলেই বেশ খানিকটা পানি খান, গ্যাপ দিয়ে দিয়ে।
*চেষ্টা করুন একটু গরম স্যুপ খেয়ে নেওয়ার। বাড়িতে থাকলেও এই একই কাজ করুন। সঙ্গে আদা-চা খান। এতে গলা ব্যথা বা মাথা ধরা থাকলে তা অনেকটা কমবে।
জ্বর হলে গোসল করা যাবে কি না?
*জ্বর এলেই রোগীর সারা শরীর স্পঞ্জিং করতে হবে অর্থাৎ ভিজে কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে।
*ঠান্ডার ধাত থাকলে বা বুকে কফ বসে যাওয়ার ভয় থাকলে কিন্তু খুব সাবধানে স্পঞ্জিং করতে হবে। আর এই সময়ে হাল্কা করে ফ্যান চালাতে পারেন।
ওষুধ খাওয়া যাবে?
অফিসে বা কোনো কাজে বাইরে থাকলে আপনি প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন। তবে ওই একবারই খান, এরপরে আর নয়। আর খাওয়ার আগে জেনে নিন এতে কোনো সাইড এফেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা আপনার।
আরও যা করবেন
*জ্বর হলে সারাক্ষণ শুয়ে থাকবেন না। এতে জ্বর বরং বেড়ে যায়। সম্ভব হলে হাঁটাহাঁটি করুন, রোদের মধ্যে গিয়ে খানিক বসুন। রোদে বসা সম্ভব না হলে একটু ছায়া জায়গা দেখে বসুন। এতে গা ম্যাজম্যাজ করা ভাবটা কমবে।
*পানি গরম করে তার মধ্যে লেবুর রস ও আদা কুচি মিশিয়ে খেলে অনেকটা উপকার পাবেন। এর ফলে ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা দূর হবে আর জ্বরও কমতে পারে।
*অল্প কয়েকটি জিরা আর কয়েকটা তুলসিপাতা পানিতে ফুটিয়ে নিন। তারপর রেখে দিন। জ্বরের সময়ে রোজ সেখান থেকে দু চামচ করে খান। গলায় বেশ উপকার পাবেন।
*অফিসে থাকার সময়ে জ্বর এলে চেষ্টা করুন মাঝে মাঝে একটু গরম চা খাওয়ার। বারবার চোখে মুখে পানি দিন। এটা কিন্তু তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে খুবই সাহায্য করবে।
*যত্ন নেয়ার পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।