ডেস্ক রিপোর্ট | মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯:
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের জামাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক রাজন কর্মকারের লাশের পাশে স্বজনের আহাজারির ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করতে গিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন দৈনিক দেশ রূপান্তরের অপরাধ বিভাগের সাংবাদিক ইমন রহমান।
সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয় মন্ত্রী পরিবারের সঙ্গে থাকা সাঙ্গপাঙ্গরা। পরে শেরে-বাংলানগর থানার কনস্টেবল শামীমের কাছে মোবাইল ফোনটি দিয়ে থানার অফিসার ইনচার্জের (ওসি) কাছে পাঠায়।
ইমন রহমান জানান, মন্ত্রীর জামাতা রাজনের মৃত্যুর সংবাদের ফলোআপ নিউজ করার উদ্দেশ্যে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে যান। সেখানে ময়নাতদন্তের জন্য রাজনের লাশ রাখা ছিল।
দুপুর দেড়টার দিকে মন্ত্রীর স্বজনেরা মর্গে প্রবেশ করে। এ সময় স্বজনের আহাজারির ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করলে তাদের সঙ্গে থাকা সাঙ্গপাঙ্গরা হামলে পড়ে। ৭/৮ জন চার দিক থেকে ঘিরে ধরে প্রথমে মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয়।
সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। মোবাইল ফোনটি একজন ছুড়ে ফেলতে যায়। পরে অপর একজন ঠেকায়।
এসময় মোবাইল ফোনটি ঘটনাস্থলে থাকা শেরে-বাংলানগর থানার কনস্টেবল শামীমকে দিয়ে তারা বলেন ওসির কাছে নিয়ে যেতে। শামীম মোবাইল ফোনসহ ইমনকে শেরে-বাংলানগর থানায় নিয়ে যান।
পরে থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ মোবাইল ফোনের ছবিগুলো মুছে ফেলে ইমনকে তা ফেরত দেন। হামলাকারীদের কাউকেই চেনেন না বলে জানান ইমন।
তিনি আরও বলেন, “থানায় যাওয়ার পথে ওই কনস্টেবলকে একটি নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয়- মন্ত্রী ওসির সঙ্গে কথা বলেছেন। ফোন যেন ওই সাংবাদিক না পায়।”
পরবর্তীতে দেশ রূপান্তর থেকে ওই নম্বরে ফোন করলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শেরে-বাংলানগর থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, “ফোনের ছবিগুলো ডিলিট করে ওই সাংবাদিককে ফোনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, ‘আমরাতো ফোন নিইনি। মন্ত্রীর স্বজন পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনটি আমাদের কাছে দিয়েছে।”
উল্লেখ্য, গত রোববার ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডা. রাজনকে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাজনের সহকর্মীদের দাবি, অতীতেও স্ত্রীর নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে লাশের ময়নাতদন্তের দাবি করে তারা।
তবে ময়নাতদন্ত ছাড়াই খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের পরিবার লাশ নিতে চাইলে বাধা দেন রাজনের সহকর্মী চিকিৎসকেরা। পরে শেরে-বাংলানগর থানায় অভিযোগ দায়ের করে রাজনের পরিবার। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে রাজনের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়।
খবর: পিবিএ