নিউজ ডেস্ক | বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০১৯:
কুড়িয়ে পাওয়া পাঁচ লাখ টাকা ও জমির খতিয়ান আসল মালিকের হাতে তুলে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এক সাংবাদিক। বুধবার দুপুরে টাকার মালিক হাটহাজারী উপজেলার মীরের খীল গ্রামে তৈহিদুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে ওই টাকা তুলে দেন প্রদীপ শীল।
প্রদীপ শীল রাউজান পৌর এলাকার ৮ নং ওয়ার্ডের ঢেউয়া পাড়ার মৃত সুরেষ শীলের ছেলে। তিনি বর্তমানে আঞ্চলিক দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ ও জাতীয় বাংলাদেশ প্রতিদিনে রাউজান প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া রাউজান সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি।
প্রদীপ শীল ইত্তেফাককে বলেন, গত সোমবার বিকাল পাঁচটার দিকে চট্টগ্রাম শহর হতে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়ক হয়ে মোটরসাইকেলে রাউজানের বাড়িতে ফিরছিলাম। বাড়িতে ফেরার পথে হাটহাজারী উপজেলার নন্দীর হাট এলাকায় পৌঁছালে সড়কের উপর একটি কাগজ মোড়ানো প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখি। এসময় আশেপাশে কেউ না থাকায় সেটি কুড়িয়ে নিই। বাড়িতে এসে নিজের ফেসবুকে কুড়িয়ে পাওয়া টাকার কথা জানাই। একই সঙ্গে প্রকৃত মালিককে তথ্য প্রমাণসহ যোগাযোগ করার আহ্বান জানাই। এই সূত্র ধরে টাকার প্রকৃত মালিক তৈহিদুল ইসলাম যোগাযোগ করেন।
আরো পড়ুন: নিরাপদ সড়কের আন্দোলনেই শিক্ষার্থীদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিলেন জবি শিক্ষক
তৈহিদুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইত্তেফাককে বলেন, টাকাগুলো হারিয়ে আমার সকল স্বপ্ন শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এক মহান হৃদয়ের সাংবাদিক ভাই আমার জীবনের সঞ্চয়গুলো বাড়িতে এসে ফিরিয়ে দিলেন। বর্তমান সময়ে এটি একটি বিরল ঘটনা। যা আমি কল্পনাও করতে পারিনি।
তিনি আরো জানান, গত ৯ মার্চ ওমান হতে দেশে ফিরেন। প্রবাসী জীবনে তিনি একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করেন। দেশে আসার আগে টাকাগুলো পাঠিয়েছিলেন। একটি সেমি পাকা ঘর নির্মাণের জন্য ১৮ মার্চ মুরাদপুর ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে টাকাগুলো উঠিয়ে অটোরিকশায় বাড়ি ফিরছিলেন। পথে টাকাগুলো কোথায় যেন হারিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আর পাওয়া যায়নি। পরে আমার পরিচিতজনদের মাধ্যমে জানতে পারি সাংবাদিক ভাইয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাসের কথা। পরে যোগাযোগ করে উপযুক্ত প্রমাণ উপস্থাপন করলে তিনি আজ বাড়িতে এসে টাকা আর জমির দলিল তুলে দেন।
সাংবাদিক প্রদীপ শীল এ প্রতিবেদককে বলেন, বিবেকের তাড়না থেকেই আমার একটা চাওয়া ছিল, কিভাবে টাকাগুলো আসল মালিকের হাতে তুলে দেওয়া যায়। আজ আমি নিশ্চিন্ত হলাম। সমাজে অনেককেই দেখি সামান্য কিছু টাকার কাছে নিজের ব্যক্তিত্বকে বিলিয়ে দিতে কার্পণ্য করে না। আমি মনে করি যার যার অবস্থান থেকে সততাকে ধারণ করতে পারলে এই সমাজটা সত্যিকার অর্থেই আরো সুন্দর হবে।