রাসেল খান,
রাজধানীর উত্তরার একটি ভবন থেকে শিশু গৃহকর্মীর রহস্যজনক লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগে বাড়ির সামনের সড়কে শিশুর স্বজনদের নিয়ে বিক্ষোভ করছে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার দুপুরে ৩ নম্বর সেক্টরের ১৮ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর ভবনের ছয়তলা একটি বাসা থেকে শিশু গৃহকর্মী বৈশাখী (১২) লাশটি উদ্ধার করা হয়। ফ্লাটটিতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত রিফাত ফেরদৌস তার স্ত্রী, এক সন্তান ও গৃহকর্মীকে নিয়ে বসবাস করতেন। ডিএমপির উত্তরা জোনের সহকারী কমিশনার কামরুজ্জামান জানান, পুলিশকে খবর দিলে সেই বাসায় যান। এরপর ঘরের ভিতরে শিশুটির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেণ। রিফাত ও তার স্ত্রীর বরাত দিয়ে তিনি জানান, ছুটির দিন হওয়ায় তাদের ঘুম থেকে উঠতে ধেরি হয়। এরপর পাশের ঘরের দরজা বন্ধ পান। এবং অন্য একটি চাবি দিয়ে দরজা খুলতেই বৈশাখীর লাশ দেখেন পরে পুলিশে খবর দেন। এদিকে শিশুটির মৃত্যু খবরে আত্মীয়-স্বজনরা ছুটে আসেন। তারা অভিযোগ করেন শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। এলাকার লোকজন সহকারে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এবং বাড়ী মুল ফটক বেঙ্গে ফেলেন এবং বাসার নিচতলা থেকে আসবাবপত্র বের করে সড়কের উপরে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গেলেও সেখানে তাদের ঢুকতে দেননি বিক্ষোভকারীরা। এছাড়াও পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়েন আন্দোলনকারীরা। পরে বিকেল ৫ টা দিকে পরিস্থিতি শান্ত করতে ঘটনাস্থলে আসেন উত্তরা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার নাবিদ কামার শৈবাল। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে উত্তরা জোনের কয়েক প্লাটুন পুলিশ,আর্ম পুলিশ ও র্যাবের সহায়তায় লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভ কারিদের ছত্রবঙ্গ করে অভিযুক্ত গৃহকর্তা রিফাত ফেরদোসকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
জানা যায়, সপ্তম তলার ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া রিফাত ফেরদোস ও তার স্ত্রী নাজরানা সাত্তার শিশু বৈশাখীকে তার মা গত ১৫ ই ফেব্রুয়ারী ২০১৯ থেকে আমার বাসায় হালকা কাজের পাশাপাশী সন্তানকে দেখাশুনা করার জন্য রাখে। ১ মাস যাবৎ করছে গত ৫ দিন আগে মাস পূর্ণ হওয়ায় তার মাকে এক মাসের বেতন দিয়ে ৪ দিনের ছুটি দিলে ৪ দিন পর সোমবার তার মা তাকে আবার বাসায় দিয়ে যায়। সে রাতে না খেয়েই ঘুমিয়ে পরে। ২৬ শে মার্চ মঙ্গলবার ছুটির দিন হওয়ায় সবাই একটু দেরিতে ঘুম থেকে উঠি বৈশাখী সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে রান্না শেষে খাওয়া দাওয়া করে এবং ঘরের হালকা কাজ সেরে বাবুর খেলার ঘড়ে যায়। সকাল ১১ টার দিকে বাবুর খাবার তৈরির জন্য তাকে ডাকলে তার সাড়া পায়নি। পরে খেলার ঘরে খোজতে গেলে ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখতে পেলে চাবি দিয়ে দরজা খুলতেই তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে। পরে পশ্চিম থানা পুলিশকে খবর দিলে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের এসআই দেলোয়ার ঘটনা স্থলে পৌছে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ দেখতে পায়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৈশাখী ঝুলন্ত অবস্থায় থাকলেও তার দুই পায়ের গুড়ালি মাটির সাথে লেগে ছিলো এবং পা থেকে হাটু প্রায় ৪ ইঞ্চি পরিমান বাকা ছিলো।