ডেস্ক রিপোর্ট | শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০১৯:
ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- এমরান হোসেন মামুন ও ইফতেখার হোসেন রানা।
এর মধ্যে শনিবার কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকা থেকে মামুনকে ও একই নিদ পার্বত্য জেলা রাঙামাটির টিঅ্যান্ডটি কলোনি থেকে ইফতেখারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে নুসরাত হত্যা মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হলো।
শনিবার রাতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র চট্টগ্রামের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে নুসরাত হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার সদ্য বাতিল হওয়া পরিচালনা পর্ষদের সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
এরইমধ্যে হত্যার দায় স্বীকার করে ৪ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নুসরাতকে যৌন হয়রানির ঘটনা এবং তার শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে বলে তারা খোঁজ পেয়েছেন। সোনাগাজীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনসহ অভিযুক্তদের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান এই সিআইডি কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় মুখোশ পরা চার/পাঁচজন নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষ সিরাজদৌল্লাহর বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। প্রায় ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত।
এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হলেও পুলিশ ও পিবিআই এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করলো।
গ্রেফতার ২১ জন হলেন- মাদরাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজদৌল্লা, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার সদ্য বাতিল হওয়া পরিচালনা পর্ষদের সহ-সভাপতি রুহুল আমিন, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুকছুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরীফ, হাফেজ আব্দুল কাদির, এমরান হোসেন মামুন ও ইফতেখার হোসেন রানা।