নিউজ ডেস্ক | মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০১৯:
‘ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়’ দাবি করায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে ওয়াসার পানি দিয়ে তৈরি শরবত পান করাতে হাজির হয়েছেন রাজধানীর কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনের উল্টো দিকের বিএফডিসি ভবনের নিচে প্ল্যাকার্ডসহ ওয়াসার এমডির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন তারা।
কর্মসূচির কথা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যানে ছড়িয়ে পড়ায় মঙ্গলবার অফিসে আসেননি ওয়াসার এমডি, ডিএমডিসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বেলা ১২টা পর্যন্ত তাদের কাউকেই অফিসে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি।
ওয়াসার এমডিকে শরবত পান করাতে যাওয়াদের মধ্যে রয়েছেন মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী শামীম হাশেম খুকি ও তাদের মেয়ে। এছাড়া একই এলাকা থেকে এসেছেন মতিয়ার রহমান। এছাড়া পুর্ব রামপুরা থেকে এসেছেন মনিরুল ইসলাম।
ওয়াসা ভবনের উল্টো দিকে এসেই তারা ওয়াসার পানি দিয়ে শরবত তৈরি করেন। লেবু-চিনির সেই শরবতই ওয়াসার এমডিকে পান করাতে চান তারা।
মিজানুর রহমান নামের জুরাইন এলাকার ওই বাসিন্দা বলেন, আমাদের এলাকায় ওয়াসার পানি ড্রেনের পানির মতো অপরিষ্কার। এটা তো খাওয়া দূরের কথা গন্ধে হাতে নেয়াই যায় না। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডি কীভাবে বলেন ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়, বিশুদ্ধ! তাই আমরা এই পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে তাকে খাওয়াতে এসেছি।’
এদিকে জুরাইনবাসীর এমন কর্মসূচিতে ওয়াসার ভবনের গেটে অতিরিক্ত পুলিশ, আনসার সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।
মিজানুর রহমান বলেন, পূর্ব জুরাইনের দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এ উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাদের এলাকার পানি খুবই খারাপ, দুর্গন্ধযুক্ত ও ড্রেনের পানির মতো। ২০১২ সালে আমরা জুরাইনের সাড়ে ৩ হাজার বাসিন্দা গণস্বাক্ষর নিয়ে ওয়াসার এমডি বরাবর একটি অভিযোগ করেছিলাম। সেই অভিযোগে কোনো কাজ হয়নি। এখনো প্রতিদিন ময়লা পানি আসে।’
তিনি আরও বলেন, আমরা কয়েক বছর ধরে ওয়াসার পানি শুধুমাত্র গোসল, কাপড় ও বাসনকোসন ধোয়ার জন্য ব্যবহার করছি। খাওয়ার জন্য মসজিদের টিউবওয়েলের পানি কিনে খাচ্ছি। প্রতি ১০ লিটার পানির জন্য ২ টাকা দিতে হয়। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডি কী মনে করে পানিকে শতভাগ সুপেয় বললেন, তা আমাদের বোধগম্য হয়নি। আজ আমরা এসেছি এর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করবো।’
এদিকে, ওয়াসা ভবনের প্রবেশ পথে সকাল থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ভবনের ভেতরে প্রবেশেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কর্মসূচি চলাকালে কর্মকর্তা-কর্মচারি ছাড়া কাউকে কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এই প্রতিবেদকও ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি।
তেজগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানান, এই কর্মসূচির কারণেই তাদের ডাকা হয়েছে। তারা প্রবেশ পথে নিরাপত্তা দিচ্ছি। এছাড়া এমডির দফতরের সামনেও পুলিশ সদস্যরা আছেন।