ডেস্ক রিপোর্ট | সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৯:
বিনা অনুমতিতে হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকা নড়াইল জেলা সদর হাসপাতালের চার চিকিৎসককে ওএসডি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে চার চিকিৎসককে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছে।
নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা গত বৃহস্পতিবার আচমকা ওই হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে কোনো চিকিৎসককে উপস্থিত দেখতে না পাওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হাসপাতালের চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নিলো।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে আকস্মিক নড়াইল সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে কোনো চিকিৎসককে পাননি মাশরাফি। এমনকি নার্সও ছিলেন মাত্র দু’জন। তিনি হাজিরা খাতায় বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের হাজিরাও দেখতে পাননি। অনুপস্থিত কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে তিনি তাৎক্ষণিক মোবাইল ফোনে কথা বলেন। কিন্তু তারা কেউ সদুত্তর দিতে পারেননি।
এসময় মাশরাফি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন এবং রোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অনিয়ম-অভিযোগের কথা শোনেন। পরে রাতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, সিভিল সার্জন, ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা নির্বিঘ্ন রাখতে ওই বৈঠকে বেশকিছু নির্দেশনাও দেন নড়াইল-২ আসনের এই সংসদ সদস্য।
এরপর গতকাল রোববার (২৮ এপ্রিল) স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ওই চার চিকিৎসককে ওএসডি করার কথা জানানো হয়। একই দিনেই তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশও জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শামীমা নাসরীন ওই প্রজ্ঞাপন ও নোটিশগুলোতে সই করেছেন।
এই চার চিকিৎসক হলেন হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ডা. মো. আখতার হোসেন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (কার্ডিওলজি) ডা. মো. শওকত আলী, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (কার্ডিওলজি) ডা. মো. রবিউল আলম ও মেডিকেল অফিসার ডা. এ এস এম সায়েম।
তাদের ওএসডি করার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের স্বাস্থ্য অধিদফতর, মহাখালীতে ওএসডি করা হয়েছে। আদেশ জারির সাত কর্মদিবসের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। তা না হলে এই কর্মস্থল থেকে তারা তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হবেন।
এছাড়া, চার চিকিৎসককে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, তারা গত ২৪ এপ্রিল কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে কর্মস্থল নড়াইল সদর হাসপাতালে অনুপস্থিত ছিলেন। বিষয়টিকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী ‘অসদাচরণের সামিল’ উল্লেখ করে তাদের এমন আচরণের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানাতে বলা হয়েছে। কারণ দর্শাতে তিন কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে চার চিকিৎসককে।