ডেস্ক রিপোর্ট | শনিবার,১১ মে ২০১৯:
বরগুনার বেতাগী থানায় স্থানীয় এক কণ্ঠশিল্পীকে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি মানিককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর দক্ষিণ মুগদার মান্ডা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-৮-এর একটি বিশেষ দল। র্যাব-৮-এর উপ-অধিনায়ক মেজর খান সজিবুল ইসলাম জানান, গত ২৭ এপ্রিল রাতে চাচা ও চাচাতো ভাইকে নিয়ে মোটরসাইকেলে গান গাওয়ার জন্য মহেশপুরের উদ্দেশে রওনা হয় ভিকটিম। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বেতাগী থানাধীন বিবিচিনি স্কুল অ্যান্ড কলেজের দক্ষিণ পার্শ্বে পৌঁছালে আসামি মো. মানিক ও আলমগীর হোসেন তাদের গতিরোধ করে। এ সময় তারা চাচা ও চাচাতো ভাইকে আঘাত করে ভিকটিমকে টেনে হিঁচড়ে মোটরসাইকেলে তুলে বেতাগী থানাধীন পুটিয়াখালী সুইজঘাটের উত্তর পাশে বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে মো. মানিক ও আলমগীর হোসেন ভিকটিমকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় গত ১ মে ভিকটিমের চাচাতো ভাই মো. মানিক বাদী হয়ে বেতাগী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার পর থেকে র্যাব-৮ আসামিদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা অভিযান ও ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে গতরাতে মানিককে গ্রেফতার করা হয়।
ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা শিশু
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের ডাটরা গ্রামে ১২ বছরের এক শিশুকে একই গ্রামের চার যুবক মিলে গণধর্ষণের পর শিশুটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে এ ঘটনার সমাধান স্থানীয়ভাবে করার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। তা ছাড়া, পুলিশ এর কিছুই জানে না।
এদিকে, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চার যুবকের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা আদায় করে অন্তঃসত্ত্বা শিশু ও তার পরিবারকে এলাকা থেকে বিতাড়নের চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, উপজেলার ১০ নম্বর দক্ষিণ গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের ডাটরা গ্রামের এক দরিদ্র নারী ওই শিশুকে দত্তক এনে লালন-পালন করেন। শিশুটির বর্তমান বয়স ১২ বছর। তবে, গত ৮ মাস আগে একই বাড়ির চার যুবক- রাব্বি (১৯), মেরাজ (২২), ইসমাইল (২১) ও আরফিন ওরফে আমিনুল (২০) মিলে শিশুটিকে ধর্ষণ করে করে। শিশুটি গত ৩ মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তার মা হাজীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক শিশুটির অন্তঃসত্ত্বার খবর জানান।
বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন তা সমাধানের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিনকে অবহিত করেন। পরে চেয়ারম্যান স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেন। এ নিয়ে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের পরিবারকে নিয়ে এলাকায় সালিশ বসে। সালিশে শিশুটি ধর্ষণের কথা জানায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, চার ধর্ষককে বাঁচাতে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন তাদের পক্ষ নেন। তারা অভিযুক্ত প্রত্যেকের কাছ থেকে জরিমানা বাবদ দেড় লাখ টাকা করে ৬ লাখ টাকা আদায় করে ইউপি সদস্য ওয়াহেদুল ইসলামের কাছে জমা দেন। কিন্তু সেই টাকা আর অন্তঃসত্ত্বা শিশুটিকে দেওয়া হয়নি।
এলাকার প্রভাবশালী সালিশদার মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমরা এলাকায় সালিশ করেছি। অভিযুক্ত চার যুবককে অর্থদ- দেওয়া হয়েছে। সে অর্থ বর্তমানে ইউপি সদস্য ওয়াহেদুল ইসলামের কাছে রয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে শিশুটির হাতে তুলে দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রকৃত দোষী ব্যক্তির সঙ্গে শিশুটির বিয়ের ব্যবস্থাও করা হবে।’
দক্ষিণ গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমি শিশুটির অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি জেনে স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। তবে প্রশাসনকে জানাইনি।’
হাজীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় আমার কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে বিষয়টি যেহেতু শুনেছি, সেহেতু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’