নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার,৩ জুন ২০১৯:
ট্রেনে ঈদযাত্রার প্রথম দিন থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত শিডিউল বিপর্যয় অব্যাহত ছিল। একদিনও ট্রেনের শিডিউল ঠিক থাকেনি। গতকাল দুপুর পর্যন্ত তিনটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সোয়া ৬টায় কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি ছেড়েছে সোয়া ৮টায়। চিলাহাটীগামী আন্তঃনগর নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৮টা ৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি ছেড়ে যাওয়া বেলা সাড়ে ১১টায়। এছাড়া রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টায় কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি নির্দিষ্ট সময় কমলাপুরে পৌঁছায়নি।
এর আগে গত রোববার ঢাকা থেকে নীলফামারীর চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময়ের ৫ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে গেছে। শুধু নীলসাগর এক্সপ্রেস নয়, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন গন্তব্যর আরও একাধিক ট্রেন নির্ধারিত সময়ের পরে ছেড়ে যায়।
গত শনিবারও ঈদযাত্রার প্রথম দিনে চট্টগ্রামগামী মহানগর এক্সপ্রেস সকাল সোয়া ৭টা ২০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও তা ছেড়েছে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৭টা ১৯ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে ৮টা ২০ মিনিটে। পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস সকাল ৮টা ১৫ ছাড়ার কথা থাকলেও তা ছেড়েছে সকাল ১০টায়। এতে স্টেশনে এসে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন নারী শিশুসহ নানা বয়সী মানুষ। তবে কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ আমিনুল হক সাংবাদিকদের জানান, অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এবার শিডিউল মেনেই ছাড়ছে ট্রেন। তবে দুএকটি ট্রেন বিলম্ব করছে। যাতে বেশি বিলম্ব না হয় সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।
এদিকে ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিটি মুহূর্ত ঢাকা ও বিমানবন্দর স্টেশনে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এবার কোনো যাত্রীকে ছাদে উঠে গন্তব্য যেতে দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে শনিবার ও রোববার মিলিয়ে শতাধিক যাত্রীকে আটক করে জরিমানা আদায় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর জিআরপি থানার ওসি ইয়াছিন ফারুক।
গত রোববার ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেন, রোববার ৫৫টি ট্রেনের মধ্যে শুধু দূরপাল্লার তিনটি ট্রেন বিলম্বে আসা-যাওয়া করেছে। আগামী দুদিনের মধ্যে শিডিউল বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কমলাপুর জিআরপি থানার ওসি ইয়াছিন ফারুক বলেন, আমরা বিনা টিকিট ও টিকিট থাকা যাত্রী যাদেরই ছাদে পাচ্ছি তাদের নামিয়ে দিচ্ছি। এরপর তাদের কি শাস্তি দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তাদের ছাদ থেকে নামিয়ে টিকিট চেকারদের হাতে তুলে দিচ্ছি। পরে তাদের ২০০/৩০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা এবার ছাদে কাউকে ট্রাভেল করতে দেব না। এখন দেখা যাক কতটুকু ঠেকাতে পারি।
এর আগে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়াজাহান বলেছিলেন, এবারে ঈদযাত্রায় ২ জুন পর্যন্ত শিডিউল মোটামুটি ঠিক থাকবে। তবে ৩ ও ৪ জুন শিডিউল কিছুটা বিপর্যয় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ যে পরিমাণ টিকিট তার চেয়ে যাত্রীর চাপ কয়েকগুণ বেশি।