আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোমবার,৩ জুন ২০১৯:
ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় ছোট্ট গ্রাম কোচোতে পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন ইয়াজিদি তরুণী নাদিয়া মুরাদ। ২০১৪ সালে ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠী (আইএস) ঢুকে পড়ে ওই গ্রামে। একদিন গ্রামের সবাইকে অস্ত্রের মুখে একটি স্কুলে ঢোকানো হয়। পুরুষদের আলাদা করে স্কুলের বাইরে দাঁড় করানো হয়। এর পরই মুহুর্মুহু গুলিতে নাদিয়ার ছয় ভাইসহ সব পুরুষকে হত্যা করা হয়।
পুরুষদের হত্যা করার পর আইএস জঙ্গিরা নাদিয়া ও অন্য নারীদের একটি বাসে করে মসুল শহরে নিয়ে যায়। সেখানে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি হন নাদিয়াও। আইএসের যৌনদাসী হিসেবে বেশ কিছুদিন থাকার পর পালিয়ে আসেন তিনি।
আইএসের কাছ থেকে পালিয়ে আসার পর নাদিয়া মুরাদ জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত হন। মানবাধিকারবিষয়ক আইনজীবী আমাল ক্লুনির সঙ্গে আইএস জঙ্গিদের হাতে বন্দী ইয়াজিদি নারী ও যারা পালিয়ে এসেছেন, তাদের নিয়ে কাজ শুরু করেন।
যুদ্ধকালে ও সশস্ত্র সংগ্রামের সময় যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে অবদান রাখায় গেল বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন নাদিয়া মুরাদ। এরপরই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকালে সেই বীভৎস দিনগুলোর কথা তুলে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।
এক সাক্ষাৎকালে নাদিয়া বলেছিলেন, ‘এক সময় বেঁচে থাকার আগ্রহও হারিয়ে ফেলেছিলাম। ওই নরক থেকে পালানোর বহুবার চেষ্টা করেছিলাম। যতবার পালাতে গিয়েছি ততবার ধরা পড়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছি। তবে মনে বিশ্বাস ছিল একদিন মুক্ত হবোই।’
‘দ্য লাস্ট গার্ল’ বইয়ে লোমহর্ষক এই কাহিনীর বর্ণনা করে নাদিয়া মুরাদ বলেন, ‘মসুলে ২০ লাখ মানুষের বাস। জঙ্গিরা ২০০০ মেয়েকে বন্দি করে রেখেছিল। বন্দি থাকাকালীন ইউরোপ, সৌদি আরব, তিউনিশিয়া থেকে ধর্ষণের লক্ষ্যে পুরুষ জঙ্গিরা আসতো। প্রতিদিন তারা আমাদের ধর্ষণ করতো। ধর্ষণের আগে ওরা আমাদের অজু করিয়ে নামাজ পড়িয়ে নিতো।’