খুলনা | মঙ্গলবার,১১ জুন ২০১৯:
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ঊঠছে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠ। সংঘাত-সংঘর্ষ হামলা, পোস্টার ছেড়ার ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই প্রার্থীর সমর্থকেরা আহত হয়েছেন। এ সকল বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও রির্টানিং অফিসারের নিকট অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১০ জুন) রাতে ও মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। আগামী ১৮ জুন এই উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্টিত হবে। উপজেলা নির্বাচনের চতুর্থ দফায় ৩১ মার্চ ডুমুরিয়া উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দুই প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ায় এক প্রার্থীর উচ্চ আদালতে রিট করায় ২৭ মার্চ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে।
পুলিশ ও স্থানীয় অধিবাসীদের সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১০টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলার ৪ নম্বর খর্নিয়া ইউনিয়ন আওযামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেক আসাদুজ্জামান স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী এজাজ আহমেদের পক্ষে গণসংযোগ ও প্রচার পত্র বিলি করছিলেন। এ সময়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা সরোয়ারের সমর্থকেরা আছাদুজ্জামানকে বেধড়ক মারপিট করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বতন্ত্র প্রার্থী এজাজ আহমেদের কর্মী সর্মথকেরা ঘটনাস্থলে এস আসাদুজ্জামানকে উদ্ধার করতে আসে। এ সময়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হয় নৌকার সমর্থক গাঝী আশরাফুল আলম, ঘোড়া প্রতীকের কর্মী সমর্থক ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোল্লা সোহেল রানা, আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানা নান্টু। আহতের ওই রাতেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অপরদিকে মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনার জের ধরে ডুমুরিয়া সদরে বিভিন্ন স্থানে টানানো ঘোড়া প্রতীকের পোস্টার ছিড়ে ফেলা হয়। এ সকল ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী এজাজ আহমেদের পক্ষ থেকে রির্টানিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন অফিসার, ডুমুরিযা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
নৌকা প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব সরদার আবু সালেহ এ বিষয়ে বলেন, ‘গতকাল ( সোমবার) রাতে ঘোড়া প্রতীকের লোকজন নৌকা প্রতীকের কর্মী সমর্থকের ওপর হামলা করে। এতে ডুমুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ুন কবীর বুলুর ভাইপো আশরাফুল আলম গুরুতর আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করা হবে বলেও তিনি জানান।’
ঘোড়া প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচীব আছফর হোসেন জোয়াদ্দার বলেন, ‘সোমবার রাতে নৌকা প্রতীকের লোকজন আমাদের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালায়। হামলায় বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাছাড়া নৌকার কর্মীবাহিনী ডুমুরিয়া সদনসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘোড়ার পোস্টার ছিড়ে ফেলেছে। এসকল বিষয় নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে ডুমুরিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, ‘সোমবার রাতে নৌকার প্রার্থী ও ঘোড়া প্রতীকের প্রার্তীর কর্মী সর্মথকদের সাথে সংঘাতের খবর শুনেছি। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনও কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাম্মাৎ শাহানাজ বেগম এ বিষয়ে বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী এজাজ আহমেদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্তে উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) মো. নাজমুল হাসান খানকে ঘটনা তদন্তে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রির্পোটের উপর ভিত্তি করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচনের রির্টানিং অফিসার ও জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ডুমুরিয়ায় পোস্টার ছেড়া বা সংঘাত সংঘর্ষের লিখিত কোন অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’