নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১৪ জুন ২০১৯:
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার এই বাজেট দেশের ৪৮ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট এটি।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বেলা ৩টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। স্পিকারের অনুমতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী নিজ আসনে বসে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পেশ শুরু করেন। বিকেল ৪টার দিকে এক পর্যায়ে আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ হয়ে পড়েন। বক্তৃতার সময় পাঁচ মিনিটের ব্রেক নিয়ে চোখে ড্রপ দেন অর্থমন্ত্রী।
এসময় তার কাছ থেকে দায়িত্ব নিয়ে বাজেট পেশ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বেলা ৪টা ৪১ মিনিটে ‘প্রস্তাবিত বাজেট সংসদে উপস্থাপিত হলো’ মর্মে ঘোষণা দেন স্পিকার। এরপর বেলা ৪টা ৪১ মিনিটে ‘প্রস্তাবিত বাজেট সংসদে উপস্থাপিত হলো’ মর্মে ঘোষণা দেন স্পিকার। প্রস্তাবিত বাজেট পাস হবে ৩০ জুন। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর।
এক নজরের প্রস্তাবিত বাজেটের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ-
বাজেটে ঘাটতি ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা
বাজেটের ঘাটতি ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ। নতুন বাজেটে ব্যয় মেটাতে সরকারি অনুদানসহ আয়ের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এনবিআর–বহির্ভূত করব্যবস্থা থেকে আসবে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন সেবামূলক থেকে ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করে রাখা হয়েছে। বরাবরের মতো আগামী বাজেটের ঘাটতিও থাকছে জিডিপির ৫ শতাংশ।
বৈদেশিক ঋণের টার্গেট ৬৩ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের বাকি ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণ সহায়তার টার্গেট ধরা হয়েছে ৬৩ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা। এর আগের বছর বৈদেশিক ঋণ সহায়তার পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার ১৬ কোটি টাকা। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ বাজেট ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার ৬২১ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থবছরের জন্য উন্নয়ন ও পরিচালন ব্যয় বাবদ ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার প্রস্তাব করছি। এর মধ্যে এনবিআর ও এনবিআর বহির্ভূত সব মিলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকার প্রস্তাব করছি। ফলে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেটের প্রস্তাব করছি।
ব্যাংক থেকে ঋণ ৪৭ হাজার কোটি টাকা
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা ধার করবে সরকার। এরমধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার পরিকল্পনার কথা নতুন বাজেট প্রস্তাবে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী।
ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকার ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ ২৮ হাজার ৯৪ কোটি টাকা। আর স্বল্প মেয়াদি ঋণ নেবে ১৯ হাজার ২৭০ কোটি টাকার প্রস্তাব করেছে অর্থমন্ত্রী।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরেছিল। এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি প্রকৃত ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। আর স্বল্পমেয়াদি প্রকৃত ঋণ ১৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
দাম বাড়ছে যেসব পণ্যের
এই বাজেটে নিত্যব্যবহার্য কিছু পণ্যের ভ্যাট হার বাড়ানো হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর কারণে সব ধরনের সিগারেট, বিড়ি, জর্দা ও গুলের দাম বাড়তে পারে। একই কারণে বাড়তে পারে মোবাইল ফোনে কথা বলার খরচ। রড উৎপাদন ও বিপণনে ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করায় বাড়ি করার খরচ বাড়তে পারে।
উৎপাদন পর্যায়ে ট্যারিফ মূল্যের পরিবর্তে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ করায় এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, গুঁড়া মসলা, টমেটো কেচাপ, চাটনি, ফলের জুস, টয়লেট টিস্যু, টিউবলাইট, চশমার ফ্রেমের দাম বাড়তে পারে।
একই কারণে দাম বাড়তে পারে প্লাস্টিকের তৈরি গৃহস্থালি সামগ্রী, সিআর কয়েল, জিআই ওয়্যার, তারকাঁটা, স্ক্রু, অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি হাড়ি-পাতিল, থালা-বাসনসহ গৃহস্থালি সামগ্রী, ব্লেড, ট্রান্সফরমার, সানগ্লাস, রিডিং গ্লাসের। স্বর্ণ ও রূপার জুয়েলারি, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, লঞ্চের এসি কেবিন, ইন্টারনেট, ইনডেনটিং, আসবাবপত্র, পরিবহন ঠিকাদার, তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর সেবার ওপর ভ্যাট দেয়ার প্রস্তাব করায় এসব ক্ষেত্রে গ্রাহকদের খরচ বাড়তে পারে।
পোশাকের মূল্যের ওপর আড়াই শতাংশ ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ফলে জামা-কাপড়ের দাম বাড়তে পারে। জামা-কাপড় কেনার পাশাপাশি তৈরি করতেও খরচ বাড়তে পারে। কারণ জামা-কাপড় তৈরির ওপর ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হবে।
দাম কমছে যেসব পণ্যের
প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে তা হলো- দেশে তৈরি ফ্রিজ, ক্যান্সারের ওষুধ, দেশে তৈরি লিফট, রপ্তানিমুখী পোশাক, চামড়াজাত জুতা, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবা, স্বর্ণ, রড, ইলেকট্রিক মোটর, বিস্কুট ও বেকারি পণ্য, অগ্নিনির্বাপক পণ্য, দেশে তৈরি মোটর সাইকেল, কৃষি যন্ত্রপাতি পাওয়ার রিপার, পাওয়ার টিলার অপারেটেড সিডার, কম্বাইন্ড হারভেস্টর, লোরোটারী টিলার, লিস্ট পাম্প।
‘কালো টাকায়’ ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্ট কেনার সুযোগ
অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে শিল্প স্থাপনে অপ্রদর্শিত আয় (কালো টাকা) থেকে বিনিয়োগ করা অর্থের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর দিলে ওই অর্থের উৎস সম্পর্কে আয়কর বিভাগ থেকে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা হবে না। একই সঙ্গে ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয় এবং দালান নির্মাণে অপ্রদর্শিত টাকা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে করহার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে শিল্প স্থাপনে অপ্রদর্শিত আয় থেকে বিনিয়োগ করা অর্থের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর দিলে ওই অর্থের উৎস সম্পর্কে আয়কর বিভাগ থেকে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা হবে না- এ সংক্রান্ত একটি বিধান আয়কর অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করছি।’
যোগাযোগ খাতে বরাদ্দ ৬১ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা
যোগাযোগ অবকাঠোমো খাতে বরাদ্দ বাড়ছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে যোগাযোগ অবকাঠোমো খাতে ৬১ হাজার ৪৫৫ কোটি বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিলো ৫৩ হাজার ৮১ কোটি টাকা। অর্থ্যাৎ এ খাতে ৮ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ছে।
এ খাতের মধ্যে রয়েছে বিমান বন্দর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, যাত্রী সেবাবান্ধব রেলপথ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বাণিজ্য সহায়ক নৌপথ ও বন্দর উন্নয়ন, সম্বনিত ও আধুনিক নগর পরিবহন ব্যবস্থা ও আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ব্যয় ২৮,০৫১ কোটি টাকা
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন তাতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা। চলতি ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এই খাতে ব্যয় ছিল ২৬ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। টাকার অঙ্কে ব্যয় বাড়ছে ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, আগামী বছরের মধ্যে দেশের সকল উপজেলার ১০০ শতাংশ বিদ্যুতায়নের আওতায় চলে আসবে। তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে গতি আনতে নতুন মডেল উৎপাদন-অংশীদারিত্ব চুক্তি (পিএসসি) অনুমোদনের পর স্থল ও সমুদ্রের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।
ইসির জন্য বরাদ্দ ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকা
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পরিচালনার জন্য ৭৭৯ কোটি টাকা এবং উন্নয়নের জন্য ১ হাজার ১৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
পোশাক খাতে প্রণোদনা ২৮২৫ কোটি টাকা
তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিতে প্রণোদনা দিতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে আরও দুই হাজার ৮২৫ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বর্তমানে তৈরি পোশাক রপ্তানির চারটি খাতে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ হারে রপ্তানি প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়াতে আগামী অর্থবছর থেকে তৈরি পোশাকের বাকি সব খাতের জন্য এক শতাংশ রপ্তানি প্রণোদনার প্রস্তাব করা হয়েছে এই বাজেটে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ুর জন্য ১৫০ হাজার কোটি টাকা
২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেটে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জন্য ১ হাজার ৪৯৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন। এর মধ্যে পরিচালনা খাতে ৮২০ কোটি ২৯ লাখ টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ৬৭৬ কোটি ২ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ ছিলো ১ হাজার ৩৪০ কোটি ৪২ লাখ ৭ হাজার টাকা।
কৃষি খাতে ১ হাজার ২৬১ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ
প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষিক্ষেত্রে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে প্রায় ১ হাজার ২৬১ কোটি টাকা বেশি। প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়, কৃষির উন্নয়নের জন্য স্বাভাবিক বিনিয়োগের অতিরিক্ত হিসেবে কৃষিপণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা ও কৃষি ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ চালিত সেচযন্ত্রের ব্যবহারের জন্য বিদ্যুৎ বিলের উপর ২০ শতাংশ রিবেট প্রদান অব্যাহত থাকবে।
ফুটবলের উন্নয়নে বাজেটে বরাদ্দ ২০ কোটি
বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের উন্মাদনা অনেক দিন থেকেই নেই। তার মূল কারণই অর্থাভাব। পর্যাপ্ত পৃষ্ঠপোষক পায় না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। সে ঘাটতি পোষাতে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে।
বাজেট ঘোষণার সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও আইসিসির সাবেক সভাপতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেন, আমাদের সরকার জাতীয়ভাবে দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির অবকাঠামো উন্নয়নে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতায় বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। বিভিন্ন খেলার মেধাবী খেলোয়াড় খুঁজে বের করা হচ্ছে এবং তাদের দীর্ঘমেয়াদী অনুশীলনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
‘২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেটে দেশের ফুটবলের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে বিশেষ অনুদান হিসেবে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য আমি প্রস্তাব করছি,’ যোগ করে আরও বলেন তিনি।
২০৩০ সালের মধ্যে ৩ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান
২০৩০ সালের মধ্যে তিন কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্বের অবসান ঘটানো হবে। বিশেষ জনগোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে। এ ছাড়া যুবকদের মধ্যে ব্যবসা উদ্যোগ সৃষ্টির জন্য ১০০ কোটি টাকা চলতি অর্থ বছরের বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সবার জন্য পেনশন
প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের সবার জন্য পেনশনের ব্যবস্থা রাখার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সেই সঙ্গে পেনশনভোগীদের সবাইকে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) পদ্ধতির আওতায় আনা হবে।
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়, সরকারি যে পেনশন ব্যবস্থা রয়েছে, তাতে জনসংখ্যার খুব সামান্য একটি অংশ এই সুবিধার আওতায় রয়েছে। দেশের সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের সব কর্মীকে ক্রমান্বয়ে পেনশন সুবিধার আওতায় আনতে শিগগিরই ইউনিভার্সাল পেনশন অথরিটি গঠন করবে সরকার।
প্রবাসীরা টাকা পাঠিয়ে প্রণোদনা পাবেন
প্রবাসীদের টাকা পাঠাতে উৎসাহ দিতে প্রস্তাবিত বাজেটে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। বিদেশ থেকে আয়ের টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে বাড়তি ব্যয় কমানো এবং বৈধ পথে অর্থ প্রেরণ উৎসাহিত করতে এই ব্যবস্থা রাখার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী।
এর ফলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসার পরিমাণ বাড়বে এবং হুন্ডি ব্যবসা নিরুৎসাহিত হবে বলেই আশা অর্থমন্ত্রীর। এ ছাড়া প্রবাসী কর্মীদের বিমা সুবিধায় আনার কথাও বলা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে।
ননএমপিও শিক্ষকদের জন্য সুখবর
দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি। ফের চালু হতে যাচ্ছে। রাখা হয়েছে বরাদ্দ। বাজেট বক্তৃতায় জানানো হয়, নানাবিধ কারণে এমপিওভুক্তি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এমপিওভুক্তি কর্যক্রমের জন্য অর্থের যোগান রাখা হয়েছে।
বাজেটে শিক্ষাখাতে মোট বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ৮৭ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। প্রাথমিক শিক্ষাখাতে বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে ২৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা, যা গত বাজেটে ছিল ২০ হাজার ৫২১ কোটি টাকা।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাখাতে ২৯ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। গত বাজেটে ছিল ২৫ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষাখাতে বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে ৭ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা। ৫ হাজার ৭৫৮ কেটি টাকা ছিল গত বাজেটে।
জ্যোতিষী ও ঘটকদের ভ্যাট দিতে হবে
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জোতিষী ও ঘটকালিতে ভ্যাট দেওয়ার প্রস্তাবনা করা হয়েছে। এ বাজেটে জোতিষী ও ঘটকালির সেবার ওপর মূল্য সংযোজ কর (মূসক) দেওয়ার ওপর প্রস্তাবনা করা হয়েছে। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে জোতিষী ও ঘটকদের ভ্যাট দিতে হবে।