নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার,২২ জুলাই ২০১৯:
আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পশুর হাটের সার্বিক ব্যবস্থাপনা তুলে ধরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ‘ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন থেকে ইজারা দেয়া নির্ধারিত জায়গায় পশুর হাট বসবে। রাস্তায় হাট বসতে পারবে না। কোরবানির পশুর চামড়া ঢাকার বাইরে যাবে না।’ সোমবার (২২ জুলাই) ডিএমপির সদর দফতরে কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমাদের সবার সাথে সমন্বয় করে একটি সুন্দর কোরবানির পশুর হাটের ব্যবস্থা করতে হবে। ঢাকা শহরে অনুমোদিত পশুর হাটে থাকবে পুলিশের কঠোর নজরদারি। পশুবাহী ট্রাক যেখানে যেতে চায় সেখানে যেতে দিতে হবে। কোনও অবস্থাতেই ধা দেয়া যাবে না। প্রত্যেকটি ট্রাক গন্তব্য স্থানের নাম বড় করে ব্যানার বানিয়ে ট্রাকের সামনে ঝুলিয়ে দেবে। কোনোভাবেই এক হাটের পশু অন্য হাটে জোর করে নামানো যাবে না। যদি এমন কেউ করে তাকে ফৌজদারি অপরাধে আইনের আওতায় আনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত হাসিলের অতিরিক্ত আদায় করা যাবে না। হাসিলে টাকার হার বড় ব্যানারে প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। পুলিশের মানি এস্কর্ট ছাড়া কোনও বড় অংকের নগদ টাকা বহন না করতে আহ্বান জানাচ্ছি। বাহিরের ভ্রাম্যমাণ দোকান ও হকার হাট এলাকায় ঢুকতে পারবে না। ইজারাদাররা নির্দিষ্ট খাবার দোকান ঠিক করে দেবেন।’
আছাদুজ্জামান মিয়া বিলেন, ‘প্রত্যেক পশুর হাটে থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক সাদা পোশাক ও ইউনিফর্মধারী পুলিশ। ইজারার চৌহদ্দির বাহিরে কোনও অননুমোদিত হাট বসতে দেয়া হবে না। প্রত্যেক হাটে থাকবে পুলিশের কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার। পশুর হাটে ও তার আশপাশে জনসচেতনতামূলক ব্যানার দৃশ্যমান স্থানে টানানো ও প্রচার প্রচারণা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জাল টাকা সনাক্তকরণের জন্য পুলিশ কন্ট্রোল রুমে থাকবে জাল টাকা সনাক্তকরণ মেশিন। এছাড়াও হাট এলাকায় বসানো হবে সিসি ক্যামেরা। সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের জন্য ইজারাদাররা উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটরের ব্যবস্থা নেবেন। হাটের চৌহদ্দি বাঁশ দিয়ে ঘেরাও করে রাখতে হবে। পরিচয়পত্রসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিবেন ইজারাদাররা।’
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘এবারের ঈদুল আজহা উপলক্ষে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এর মধ্যে পশুর হাটকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, মানি এস্কর্ট ও জাল নোট সনাক্তকরণ এবং চামড়া ক্রয়-বিক্রয় ও পাচার রোধ সংক্রান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।’
তিনি জানান, এছাড়াও নিরাপত্তার আওতায় থাকবে স্বর্ণের দোকান, মার্কেট ও ব্যাংকগুলো। পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেলওয়ে স্টেশনকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ ও পর্যায়ক্রমে ছুটি দেয়া এবং ঈদ ও ঈদ পরবর্তী সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
সভায় জানানো হয়, ঈদুল আজহায় ঢাকা মহানগরে অনুমোদিত পশুর হাট থাকবে মোট ২৭টি। যার মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৫টি, উত্তর সিটি করপোরেশনে ১১টি এবং ক্যান্টমেন্ট বোর্ডের অনুমোদনে ১টি পশুর হাট থাকবে।
সমন্বয় সভায় ডিএমপি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা সংস্থা ও সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, দোকান মালিক সমিতি, হাট ইজারাদার, চামড়া ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।