নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০১৯:
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘আমি মনে করি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাষানচর বা অন্য কোথাও স্থানান্তর করে দেয়া উচিত হবে না, সেটি ভুল হবে। যদি অন্য কোনও স্থান বাছাই করে সেখানে রোহিঙ্গাদের পাঠানো হয় তাহলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই বার্তাটি পৌঁছাবে যে, আমরা তাদের জন্য চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত না হলেও দীর্ঘকালীন একটি বন্দোবস্ত করেছি। তখন তারা মুচকি হাসবে।’
শুক্রবার (২৫ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে কক্সবাজার ফোরাম, ঢাকা আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সমস্যা: মহাসঙ্কটে কক্সবাজার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘এমন কোনও ব্যবস্থা এই মুহূর্তে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা উচিত হবে না, যেটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ভুল একটি বার্তা প্রেরণ করতে পারে। যারা কক্সবাজারবাসী আছেন তারা হয়তো দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। তবে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করলে আন্তর্জাতিক মহল কিন্তু মুচকি মুচকি হাসবে। এবং তারা ভাববে, বিষয়টি বোধহয় সমাধান হয়ে যাচ্ছে। এই বার্তাটি বোধহয় কখনোই আন্তর্জাতিক মহলের কাছে দেয়া উচিত হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের যদি জামাই আদরে রাখা হয়, এটা কিন্তু খারাপ না। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে তাদের এই জামাই আদর পাওয়ার কথা। বাংলাদেশ যদি জামাই আদর করে থাকে তাহলে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সাধুবাদ জানাবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আমরা যেখানে এতটা কষ্ট করি সেখানে তাদের ভালো রাখবার জন্য প্রতিনিয়ত যে চেষ্টা করে যাচ্ছি সেটি বাংলাদেশের জন্য বিশালতা। এটি আমাদের বোধহয় মেনে নেয়া উচিত। আমি আরও একটু বলতে চাই, যারা ওখানকার বাসিন্দা, তারা নিত্যদিন রোহিঙ্গাদের এই চাপ নানাভাবে সহ্য করছেন। তাদের জন্য অবশ্যই রাষ্ট্র এবং সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। এবং সেটি নজরে আনা উচিত।’
দুর্নীতিবাজ কর্মকতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া জরুরি উল্লেখ করে মানবাধিকার কমিশনের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, ‘যারা রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দেয়ার ব্যবস্থা করছে, যারা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার ব্যবস্থা করছে, যারা তাদের জমি ক্রয় করতে সহযোগিতা করছে, সেইসব দুর্নীতিবাজ কর্মকতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য রোহিঙ্গাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে কোনও লাভ নেই। এটা বোধহয় সভ্যতার পরিচয় হবে না।’
আলোচনা সভায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান, কক্সবাজার ফোরাম ঢাকা’র আহ্বায়ক ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এবং সদস্য সচিব সুজন শর্মা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।