November 2, 2025, 7:29 am

মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলকে বিশ্বাস করছে না রোহিঙ্গারা

Reporter Name 131 View
Update : Saturday, July 27, 2019

কক্সবাজার | শনিবার, ২৭ জুলাই ২০১৯:
মিয়ানমার থেকে একটি প্রতিনিধি দল শনিবার (২৭ জুলাই) কক্সবাজারের কুতুপালংয়ের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসে। মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ের নেতৃত্বে আসা এ প্রতিনিধি দলের কথাতেও বিশ্বাস পায়নি রোহিঙ্গারা।

কুতুপালং এক্সটেনশন-৪ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের পর উভয়পক্ষে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে রোহিঙ্গা নেতারা তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন।

মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের প্রধান, দেশটির পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে রোহিঙ্গাদের দাবির প্রেক্ষিতে বলেন, ‘এটি মিয়ানমার সরকার বিবেচনা করছে। আমরা আপনাদের ফিরিয়ে নিতে এসেছি। রাখাইনে আপনাদের জন্য ঘরবাড়ি, স্কুলসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপনারা (রোহিঙ্গা) মিয়ানমারে ফিরে যান।’

মিন্টার এমন কথায় আশ্বস্ত হতে পারেননি রোহিঙ্গা নেতারা। তারা তাদের এ আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল বলেছে, রোহিঙ্গাদের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।

এর আগে ১৫ সদস্যের এ প্রতিনিধি দলটি শনিবার সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছে। এরপর ইনানীতে অবস্থিত রয়েল টিউলিপ হোটেলে বিশ্রামি নিয়ে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং এক্সটেনশন-৪ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন রোহিঙ্গা ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম, অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ্দোজা নয়ন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এসএম সরওয়ার কামালসহ ‘আরআরআরসি’ জেলা প্রশাসন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থার লোকজন।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম বলেন, ‘দুপুর ১টার দিকে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল উখিয়ার ক্যাম্প এক্সটেনশন-৪-এ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। বিকেলে আহা সেন্টারের প্রতিনিধিদলটি রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন এবং সন্ধ্যায় রয়েল টিউলিপে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। রবিবার (২৮ জুলাই) সকালে আবারও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের।’

২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের ওপর রাখাইন রাজ্যে চলা হত্যা, ধর্ষণসহ বিভিন্ন সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে এই পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ পাহাড়ে ৩৪টি শরণার্থী ক্যাম্পে এসব রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। রোহিঙ্গাদের ফেরাতে শরণার্থী প্রত্যাবর্তনে এর আগে দ্বিপক্ষীয় একটি চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। সব ধরনের প্রস্তুতির পরও মিয়ানমার রহস্যজনক কারণে চুক্তি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেনি।

পরে জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করলেও চীনের রহস্যজনক ভূমিকায় সমস্যা আলোর মুখ দেখেনি। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিন দেখে তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয়বারের মতো মিয়ানমার এই প্রতিনিধিদলের আগমণ বলে ধারণ করা হচ্ছে।


More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর