চলে গেলেন গণপিটুনির শিকার ভ্যানচালক মিনু মিয়া
ঘাটাইল | সোমবার, ২৯ জুলাই ২০১৯:
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যুর কাছে হার মানলেন গণপিটুনির শিকার ভ্যানচালক মিনু মিয়া (৩০)। গত ২১ জুলাই টাঙ্গাইলের কালিহাতীর সায়া হাটে ছেলেধরা সন্দেহে মিনু মিয়াকে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। সোমবার (২৯ জুলাই) সকাল ১০ টায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালিহাতী থানা পুলিশ।
নিহত মিনু মিয়া ভূঞাপুর উপজেলার টেপিবাড়ি গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে। ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে চালাতেন সংসার। পরিবারে তার প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া একটি ছেলে ও ছয় মাসের গর্ভবতী স্ত্রী রয়েছে।
জানা যায়, ভূঞাপুর-তারাকান্দি বাঁধ ভেঙে আকস্মিক বন্যার পানি বাড়িতে প্রবেশ করায় হতদরিদ্র অটো-ভ্যান চালক মিনু মিয়ার রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে গত ২১ জুলাই পার্শ্ববর্তী কালিহাতী উপজেলার সয়া হাটে মাছ ধরার জন্য জাল কিনতে গিয়েছিলেন তিনি। হঠাৎ ছেলেধরা সন্দেহে মিনু মিয়ার উপর উত্তেজিত হয়ে গণপিটুনি দেয় উপস্থিত জনতা।
পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে মিনুর অবস্থা অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু মাথায় আঘাত গুরুত্বর হওয়ায় রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিনু মিয়ার মৃত্যু হয়।
নিহতের পাশে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুলিয়াস সিজার তালুকদার বলেন, ২২ জুলাই গণপিটুনির শিকার দরিদ্র মিনু মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার অবস্থা ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। এখানে দীর্ঘ আটদিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তাকে অনেকে সাহায্যের প্রতিশ্রতি দিলেও বাস্তবে কেউ এগিয়ে আসেনি।
জানতে চাইলে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন মুঠোফোনে বলেন, ‘গণপিটুনির ঘটনায় হত্যা চেষ্টা মামলায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। সেই মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।’
মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।








