নিজস্ব প্রতিনিধি | মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট ২০১৯:
টুং-টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে গাজীপুর নগরীর কোনাবাড়ী এলাকার কামারপল্লী। দিন রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। কোরবানীর ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বাড়ছে তাদের ব্যস্ততা। লোহার তৈরি নতুন দা, চাপাতি, ছুরি তৈরির পাশাপাশি চলছে পুরনোগুলোতে শান দেওয়ার কাজ। কোনাবাড়ী বাজার,কেয়া স্পিনিং এর সামনে, জরুন ডেল্টা মোড়, কাশিমপুরে ছোট-বড় সব হাটের কামাররা এখন মহাব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোর থেকে শুরু করে তাদের কাজ চলছে গভীর রাত পর্যন্ত।
কোনাবাড়ী কামার পল্লীর মকবুল হোসেন জানান, কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে বেচাকেনা ভালই হচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। যা আগে সারাদিনে বিক্রি করতাম ১ হাজার টাকা। তিনি জানান, একটি বড় দা পাঁচ কেজির লোহা দিয়ে তৈরি করে মজুরিসহ আটশ’ টাকা, এক কেজি ওজনের কুড়াল তিনশ’, চাপাতি প্রকার ভেদে ৪৫০ টাকা থেকে ছয়শ’ টাকা, বিভিন্ন আকারের ছোরা ৩৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, অন্য সময়ের চেয়ে এখন সকল মালামালের দাম দ্বিগুন রাখা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর কোনাবাড়ী এলাকার কামার পল্লীর কামারদের এখন দম ফেলার সময় নেই। একের পর এক ক্রেতা এসে দোকানে ভিড় করছেন। ফলে তাদের দোকান ছেড়ে যাওয়ারও কোন উপায় নেই। তাই সকাল, দুপুর বা রাতের খাবার তারা দোকানে বসেই সেরে নিচ্ছেন। পুরনো দুইটি দা, একটি বটি ও একটি ছুরিতে শান দেয়ার জন্য কামাররা ১৫০ টাকা নিচ্ছেন। অন্যসময় যার মজুরি ছিল ৫০টাকা। আর নতুন একটি ছোরা ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা, বিভিন্ন সাইজের চাক্কুু ৫০ থেকে একশ’ টাকা, বটি দুই থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
শহিদুল ইসলাম বলেন, সারাবছরই আমাদের তৈরি মালামালের কমবেশি চাহিদা থাকে। তবে কোরবানীর ঈদে পশু কোরবানীর জন্য নতুন ছুরি, চাপাতি, চাক্কুর কদর অনেক বেড়ে যায়।
মকবুল হোসেন জানান , আগে যে কয়লা ৪০০ টাকা দিয়ে কিনতাম এখন তা ১৩০০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে এবং লোহা ছিলো ৬০ টাকা এখন ৮০ টা দরে কিনতে হচ্ছে। যার কারণে দাম একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে।
ঈদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে গিয়ে তাদের রাত-দিন কাজ করতে হচ্ছে। তাদের এই কর্মব্যস্ততা থাকবে কোরবানীর ঈদের আগের দিন পর্যন্ত।