বরগুনা | রবিবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯:
দেশব্যাপী বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। এতে মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করা হয়।
চার্জশিটে রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার ১নং আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মিডিয়ার সঙ্গে কথা না বলাসহ ৩ শর্তে গত ২৯ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন। তবে মিন্নিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আজ রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের দেওয়া জামিন সংক্রান্ত রায় প্রকাশিত হওয়ার পর অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড হিসেবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সুফিয়া খাতুন এ আপিল দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে রাম দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। একাধারে রিফাতকে কুপিয়ে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে হামলাকারীরা। গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে নিহতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে প্রথমে ১২ জনের নাম ও বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত উল্লেখ্য করে বরগুনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় এ পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এখন পর্যন্ত ১০ আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর মিন্নির সঙ্গে খুনি নয়ন বন্ডের বিভিন্ন ভিডিও, অডিও ও ছবি ভাইরাল হলে তাকে ঘিরে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। ১৬ জুলাই সকালে মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। এরপর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯ টায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে তাকে রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তখন স্বামী রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।