চবি প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও দ্য ডেইলি সানের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবেদক ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে অন্যায়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কারের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)।
মানববন্ধনে চবিসাসের সভাপতি আবদুল্লাহ আল ফয়সালের নেতৃত্বে চবিসাসের সকল সদস্যরা ৪ দফা দাবি উত্থাপন করে। ৪ দফা দাবি হলো- সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি খন্দকার নাসিরুদ্দিনের পদত্যাগ, ক্যাম্পাসগুলোতে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিত করণ, জিনিয়াকে হেনস্তকারীর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা, আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিনিধি সামশ জেবিনের উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের মদদে সন্ত্রাসী হামলার বিচারের দাবি।
চবিসাসের সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের চৌধুরীর সঞ্চালনায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে শুরু হয়।
এতে একাত্নতা প্রকাশ করে অংশগ্রহন করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র, স্টুডেন্টস অ্যাগেইনিস্ট বায়োলেন্স এব্রি হয়ার এর সংগঠক নকীব, বিশ্বিবদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংসদের সাধারণ সম্পাদক আজাজুল আহমেদ সহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জনাব প্রণব মিত্র চৌধুরী মানববন্ধনে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ মূলত বিচার-বিশ্লেষণ,আলোচনা-সমালোচনা ইত্যাদি করা। এর দ্বারা সত্য উদ্ভাবন হয়। সাংবাদিকরা এই সত্যকে তুলে ধরে। তিনি অারও বলেন, সাংবাদিকরা প্রশাসনের সহায়ক বা শক্তি। আমি মনে করি সাংবাদিকরা হল আমাদের তরুণ শক্তি। এছাড়াও সাংবাদিকদের ক্ষতিকর না ভেবে বরং সহায়ক হিসেবে ভাববার কথাও বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খন্দকার নাসির উদ্দিনের ফেসবুক আইডি হ্যাক করার হুমকির অভিযোগে আইন বিভাগের এই ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. নূরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বহিষ্কারের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ‘আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সম্পর্কে ফেসবুকে খারাপ মন্তব্য করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ফেসবুক আইডি হ্যাক করে প্রশাসনকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি করার হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী জিনিয়া গণমাধ্যমকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যুরাল নিয়ে একটি রিপোর্ট করার কারণেই মূলত আমার প্রতি এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। আমার প্রাথমিক সোর্স যিনি ছিলেন তিনি ৩০ আগস্ট একটি তথ্য দেন আমাকে এবং ফেসবুকে পোস্ট দেন। এরপর প্রশাসনের লোকজন তাকে তুলে নিয়ে যায় এবং মারধর করে তার ল্যাপটপ থেকে আমাদের কিছু কথোপকথনের রেকর্ড পায়। সেই কথোপকথন থেকে তারা জানতে পারে আমার কাছে আরও তথ্য আছে। ফলে আমার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২২ আগস্ট বিভিন্ন রিপোর্টের তথ্য চাওয়ার কারণে উপাচার্য ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন উল্লেখ করে এই শিক্ষার্থী বলেন, বিভিন্ন সময় দাবি ওঠে ক্লাসরুম নেই, আবাসন সংকট। এসব বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেই প্রশাসন থেকে উত্তর আসে, আমরা গাছ লাগাই। এটা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার পোস্টে অনেকে কথা বলার কারণে তিনি রেগে ছিলেন।