আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বুধবার,২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯:
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গণহত্যা, ধর্ষণসহ নানা নির্যাতনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা যখন পালাচ্ছিল তখন থেকেই এর তীব্র সমালোচনা করে আসছে মালয়েশিয়া। এবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের প্রাক্কালে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের কঠোর সমালোচনা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ।
বিশ্বের অন্য দেশগুলোর প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে মাহাথির বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট নিরসনের জন্য বাংলাদেশ ও আমাদের সঙ্গে অন্যরাও যোগ দেবেন আশা করি। এই সংকটের অবসান হওয়া উচিত এবং তা এখনই।’
স্থানীয় সময় (২৪ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দফতরে ওআইসি এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন কর্তৃক আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সংকট- উত্তরণের পথ’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে সাইডলাইন আলোচনায় মাহাথির এসব কথা বলেন।
মিয়ানমারের কঠোর সমালোচনা করে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, মিয়ানমারের দাবি, সন্ত্রাসী হুমকি মোকাবেলায় তারা রাখাইনে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, সেখানে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কারণে লাখ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। রাখাইনে যা ঘটেছে তা ছিল একটি গণহত্যা। এখন মিয়ানমার যেহেতু এ সমস্যার সমাধানে আগ্রহ দেখাচ্ছে না, তখন এর সমাধানের দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপরই বর্তায়। ভবিষ্যতে মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলার উদ্দেশ্যেই জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এখন সংস্থাটির উচিত রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখা।’
ভবিষ্যতে এ ধরনের মানবসৃষ্ট সংকট রোধে জাতিসংঘকে তার কাজ যথাযথভাবে পালন করে যেতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এই সংকট এখন আর মিয়ানমার বা বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এমতাবস্থায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই কিছু একটা করতে হবে।’
ড. মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ায় আমরা বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানাই। মালয়েশিয়াও যতটুকু সম্ভব করার চেষ্টা করেছে।’
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরতে না চাওয়াটাই স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেন মাহাথির। তিনি বলেন, ‘এর কারণগুলো স্পষ্ট। কেউ যদি তার সুরক্ষার নিশ্চয়তা বোধ না করে তবে সে ফিরবে না। এজন্য রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বতঃস্ফূর্ত ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ওপর মালয়েশিয়া জোর দিচ্ছে। এটি শুধু রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দেওয়ার মাধ্যমেই নিশ্চিত করা সম্ভব। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বাইরে অন্যদেরও এ সংকট সমাধান এবং অপরাধীদের বিচারের জন্য ভূমিকা নিতে হবে।’