নুর নবী রবিন | বুধবার,২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯:
সময়টা ঠিক দুপুর ২.৩০ ছুঁইছুঁই । চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেলস্টেশনের ফ্ল্যাটফর্মে এসে পৌঁছেছে একটি শাটল ট্রেন। ৭ বগি বিশিষ্ট ট্রেনে হুড়োহুড়ি করে উঠল শহরগামী শিক্ষার্থীরা। মুহুর্তের মধ্যে পুরিয়ে গেল সব কয়টি আসন। বসতে পারা শিক্ষার্থীদের চেয়ে কোনোরকম দাঁড়িয়ে থাকতে পারাদের সংখ্যা দ্বিগুণ।
বাহিরের প্রচন্ড গরম শাটলের বগিতে অনুভুত হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। কানায় কানায় ভর্তি হওয়া বগিতে প্রতি সিটে ২ জনের স্থলে কষ্ট করে বসেছে ৩ জন। সিটের পেছনের অংশের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছে আরো কয়েকজন। ভেতরে স্থান না পেয়ে অনেকে উঠছে শাটলের ছাদে। এভাবেই প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চট্টগ্রাম শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করা শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বগিতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় পা-দানিতে জড়োসড়ো হয়ে বসে যায় কেউ কেউ। আর এতেই ঘটে বিপত্তি। ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে অনেকে মোবাইল হারায়, ব্যাগ হারায় আবার আহত হওয়ার খবরও শোনা যায় প্রায়। এ বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর পা-দানিতে বসে আহত হয়েছে সমাজতত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার। গত বছরের আগস্ট মাসে ষোলশহরে দুই পা হারিয়েছিল একই বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রবিউল আলম।
শাটলে বগি কম হওয়ায় অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয় বলে বিরক্তি প্রকাশ করেন মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র শরীফ হোসেন। আইন বিভাগের ১৬-১৭ শিক্ষার্ষের নাজমুল হাসান বলেন, শাটল যেন একটি চলন্ত অগ্নিকুণ্ড। তাছাড়া একটি মালবাহী বগি যে কেন জুড়ে দেওয়া হয়, সেটাও বুঝিনা। শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শতাব্দী রায় মনীষা বলেন, ভীড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে মেয়েদেরকে বেশি কষ্ট করতে হয়। অনেক সময় মাথা ঘুরিয়ে পরে যায়। তাছাড়া কিছুদিন ধরে নিয়ম করে ঘটছে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারছি না, ক্লাস মিস হয়ে যায়।
গতবছর শাটল ট্রেনের বগি বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রনেতা ইফরাতুল আলম পিটু বলেন, আমরা আন্দোলন করার পর নয়টি বগি সংযুক্ত করা হয়েছিল। এখন আবার কি এক অজানা কারণে কমে গেছে। ফের বগি বাড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দায়িত্ব নিতে হবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) প্রণব মিত্র চৌধুরী বলেন, শাটলে বগি কমে যাওয়া ও মালবাহী বগি দেওয়ার বিষয়টি আমরা রেলওয়েকে জানিয়েছি। এখন রেলওেয়ের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি।