সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। অফিস নথিতে ২১ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বাস্তবে দুইজন চিকিৎসক ডিউটি করছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। একে ওই হাসপাতালের সরকারি অবকাঠামো, চিকিৎসা সরঞ্জাম ওযন্ত্রপাতির ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে স্থানীয় লোকজন সরকারি হাসপাতাল বিমুখ হচ্ছে। এতে স্থানীয় প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রোগীদের চিকিৎসার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রচুর অর্থ।
জানা গেছে, চিকিৎসক সংকট ও সরঞ্জামাদির অভাব থাকায় সাধারণ মানুষ অসুখ বিসুখে সরকারি এ হাসপাতালে যেতে চায় না। বাধ্য হয়েই পাশ্ববর্তী প্রাইভেট ক্লিনিক ও জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয় তাদের। আর এ কারণেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে প্রাইভেট ক্লিনিক।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক ও একজন ডেন্টাল সার্জনের পদ থাকার কথা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে রয়েছেন দুইজন চিকিৎসক। তাদের বাধ্য হয়েই সিডিউল অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করারা শর্তে হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, অধিক সময় ডিউটি করায় রোগীদের চাপ সামলাতে পারছেন না। এ সুযোগে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠা প্রাইভেট হাসপাতাল ব্যবসা করছে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের আইপিএস মেশিনটি বিকল হয়ে যাওয়ায় রাতে লোডশেডিং হলে হাসপাতালে হারিকেন জ্বালিয়ে রাখতে হয়। একটি জেনারেটর রয়েছে লোকবলের অভাবে সেটি কাজে লাগছে না।
হাসপাতাল প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘদিন অকেজো হয়ে আছে। লোকবলের অভাবে প্যাথলজি বিভাগ বন্ধ রয়েছে। রোগীর অপারেশন করার জন্য নেই অজ্ঞান করার ডাক্তার। সিজারিয়ান ও নারীর চিকিৎসায় গাইনি ডাক্তারের পদ খালি রয়েছে। রোগী স্থানান্তরের ভরসা সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন অকেজো। এ ছাড়াও ক্লিনারের অভাব জানান দিচ্ছে তেল চিটচিটে বেডশিট ও বালিশ কভার।
অভিযোগ উঠেছে, প্রাইভেট ক্লিনিকের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের সুযোগ নিতেই সরকারি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটি ঠিক করছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে, অবৈধভাবে ওষুধ বিক্রিসহ ঠিকমতো রোগীর চিকিৎসা না করার অভিযোগে রয়েছে।
আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা, অরুণ কুমার ব্যানার্জী বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি সিভিল সার্জনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার উপযোগী করা হবে।