স্টাফ করেসপন্ডেন্ট:
আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশন গার্মেন্টস মালিক দেলোয়ার হোসেনের শাস্তি দাবি করেছে ওই প্রতিষ্ঠানটির আহত শ্রমিকরা। শুক্রবার (২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির আহত শ্রমিকরা বলেন, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে অবস্থিত তাজরীন ফ্যাশন গার্মেন্টে অগ্নিকান্ড ঘটে। আগুন লাগার সাথে সাথে মালিকপক্ষ ভবন থেকে বের হওয়ার একমাত্র সিঁড়ি তালাবন্ধ করে দেয়। আমরা আগুনের হাত থেকে জীবন বাঁচাতে কারখানাটির ৫, ৪ ও ৩ তলা থেকে লাফিয়ে নিচে পরতে বাধ্য হই।
এতে আমাদের অনেকেরই মেরুদণ্ড, ঘাড়, মাথা, হাত ও পা ভেঙ্গে মারাত্মক আহত হই। এছাড়া ওই ঘটনায় ১১৩ জন মারা যায়। ওই ঘটনায় মারাত্বক আহত হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়ে আজও বেঁচে আছি। কিন্তু কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারছি না। পরিবার পরিজন নিয়ে বর্তমানে আমাদের জীবন কাটছে অত্যন্ত অমানবিকভাবে অনাহারে-অর্ধাহারে।
তারা আরও বলেন, শুরু থেকেই আমরা আমাদের সু-চিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পূর্ণবাসনের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। ক্রেতা সংস্থাসহ অনেকেই তখন আমাদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পূর্ণবাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে দেখলাম, অগ্নিকান্ডের প্রায় ৪ বছর পর আমাদের দেয়া হল সামান্য অনুদান, সেখানেও নিদারুণ বৈষম্য।
যে পরিমাণ টাকা তখন অনুদান হিসেবে দেয়া হয়, তার চেয়েও বেশী খরচ হয়ে যায় আমাদের চিকিৎসা করাতে। আজ আমরা কর্মক্ষমতা হারিয়ে বিজিএমইএসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের জন্য দাবি জানিয়েও বঞ্চিত হচ্ছি।
তারা দাবি জানিয়ে বলেন, সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাতে চাই, অবিলম্বে যুগপোযোগী ক্ষতিপূরণ আইন করে আমাদের ক্ষতিপূরণ, পূর্ণবাসন ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যদিকে অগ্নিকান্ডের জন্য দায়ী, শ্রমিক হত্যা মামলার আসামী তাজরীন গার্মেন্টের মালিক দেলোয়ার হোসেন শরীরে বাতাস লাগিয়ে ঘুড়ছে, ব্যবসা করছে।
তার বিচারের কাজ চলছে অত্যন্ত অবহেলার সঙ্গে। আমরা ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি খুনি দেলোয়ার হোসেনের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
এদিকে একই দাবিতে ১৪ দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ২৫টি আহত শ্রমিক পরিবার।