ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তার বিরুদ্ধে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সকালে চরভদ্রাসন থানায় ফরিদপুরে জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা নওয়াবুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
এর আগে গতকাল বুধবার (১৪ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে আসন্ন ঢাকা-৫ ও ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে এক বৈঠকে সিইসি বলেছিলেন, ‘স্থানীয় সাংসদ নিক্সন বিধি বহির্ভূত আচরণ করেছেন। এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত আমাদের কাছে আছে। যা মামলা করার জন্য যথেষ্ট। আজ-কালকের মধ্যেই নিক্সনের বিরুদ্ধে মামলা করবে ইসি। আগামীকালের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।’
এমপি নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে গত মঙ্গলবারই মামলা দায়েরের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সিইসি।
ওইদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেছিলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনার সময় একজন সংসদ (নিক্সন চৌধুরী) যে আচরণ করেছেন, তা কাম্য নয়। তিনি আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন এবং আইনে যে বিধিবিধান আছে, তার ব্যাপারে সেই বিধান পরিপূর্ণভাবে প্রযোজ্য হবে। সংসদ সদস্য হিসেবে এ ব্যাপারে আলাদাভাবে কোনও কিছু হবে না।’
এর আগে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নিক্সন চৌধুরীর অশোভন আচরণের বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেয়া হয়েছিল।
এদিকে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকারকে ‘দাঁতভাঙা জবাব’ দেয়ার হুমকি দিয়েছেন সাংসদ নিক্সন চৌধুরী। চরভদ্রাসনের ইউএনও’র ফোনে ফোন করে গালিগালাজ করেছেন ভাঙা উপজেলার এসিল্যান্ডকে। চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে ঘিরে গেল শনিবার (১০ অক্টোবর) এ দুটি ঘটনা ঘটে। দুটি ঘটনারই ভিডিও ও অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
তবে গালিগালাজের ভয়েসটা ‘নিজের না’ দাবি করে গেল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘‘এই ভয়েসটা আমার না। প্রথমে আমি এসিল্যান্ডকে (সহকারী কমিশনার ভূমি) ফোন করেছিলাম। ‘আমি দেখতেছি’ এটা বলে এসিল্যান্ড ফোনটা বন্ধ করে দেন। পরে আমি আপাকে (ইউএনও) ফোন করলাম। বললাম যে, আপা আমার এরকম একটা লোক ধরা পড়ছে, আপনি একটু দেখেন, তার কোনও অন্যায় নাই। সে মাঠে দাঁড়ায়ে সিগারেট খাচ্ছিল। তাকে বিজিবি ধরে নিয়েছে, আপনি একটু ব্যবস্থা নেন। এই কথাটুকুই আমি তাকে বলেছি। বাকি কোনও কথা আমার না। আমার কথার সত্যতা ইউএনও সাহেবকে জিজ্ঞেস করলেই পাওয়া যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা জিজ্ঞেস করেন এই গালিগুলো আমি আমার ইউএনওকে দিয়েছি কিনা। সে বলুক এই গালিগুলো আমি তাকে দিয়েছি। সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণ করেন, এই ভয়েসটা আমার। এই ক্লিপগুলা এক এক জায়গা থেকে কেটে নিয়ে, আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এটা করা হয়েছে।’
দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী কোনও মহল এ ধরনের ভিডিও ও অডিও ভাইরাল করেছে বলেও দাবি করেন নিক্সন চৌধুরী।