খুলনায় গ্রেফতার হওয়া পাটকল শ্রমিক ও বাম জোটের ১৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। সোমবার (১৯ অক্টোবর) খানজাহান আলী থানায় এই মামলা করা হয়।
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) তাদেরকে আদালতে হাজির করা হবে বলে জানিয়েছেন খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস।
এরআগে সোমবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা-যশোর মহাসড়কে ইস্টার্ন গেট এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি থেকে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদাসহ তাদেরকে আটক করা হয়। তবে রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুদরত-ই খুদাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালু ও পাটকলে আধুনিকায়নসহ ১৬ দফা দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমর্থনে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ সোমবার ওই স্থানে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয়।
সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক কুদরত-ই খুদা বলেন, দাবি আদায়ে ইস্টার্ন মিল গেটে শান্তিপূর্ণ অবরোধ শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। তাদেরকে ১৫মিনিটের জন্য হলেও কর্মসূচি পালন করতে দিতে অনুরোধ করলেও তারা শোনেনি। বরং ওই স্থান থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে গেলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ইট পাটকলে নিক্ষেপ, পুলিশের লাঠিচার্জ ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
সিপিবি জেলা সদস্যমণ্ডলীর সদস্য সুতপা বেদজ্ঞ জানান, সিপিবি নেতা এসএ রশীদ, মিজানুর রহমান বাবু, বাসদ নেতা জনার্দন দত্ত নান্টু, শ্রমিক নেতা অলিয়ার রহমানসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। আদালতে তাদের জামিনের আবেদন জানানো হচ্ছে।
অপরদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালনের সময় যাত্রীবাহী পরিবহন ফেম নামক চলন্ত একটি বাস ভাঙচুর করা হয়। শ্রমিকরা বিভিন্ন দিক থেকে খুলনা-যশোর মহাসড়কে চলমান যানবাহন এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ও রেললাইনের পাথর ছুড়তে থাকেন। এ সময় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট নয়জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জানমাল ও সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে পুলিশ সাত রাউন্ড টিয়ারশেল এবং দুই রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে উত্তেজিত অবৈধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
গতকাল সোমবার খুলনায় সড়ক অবরোধকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে পাটকল শ্রমিকদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। রাতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানানো হয়।