পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার চলমান বিচারিক কার্যক্রমকে ‘বেআইনি ও অবৈধ’ দাবি করে আসামিপক্ষের করা ফৌজদারি রিভিশন মামলার শুনানির জন্য আগামী ১০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ঈসমাইলের আদালতে এ শুনানি হয়।
শুনানিতে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফার করা সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন।
মেজর সিনহা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি পুলিশের বহিষ্কৃত পরিদর্শক লিয়াকত আলীর পক্ষে গত ৪ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ রিভিশন মামলা করা হয়েছিল। ওইদিন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ঈসমাইলের আদালতে দাখিলকৃত মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারক রিভিশন মামলাটি (নং ১৮৯/২০২০) আমলে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ শুনানি ও আদেশের জন্য ২০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছিলেন।
এর আগে গেল ৪ অক্টোবর আদালত প্রাঙ্গণের পরিদর্শক লিয়াকত আলীর নিযুক্ত আইনজীবী মাসুদ সালাহ উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মেজর সিনহার মৃত্যুর পর গত ৫ আগস্ট তার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই আদালতের বিচারক ফেরদৌসির দায়ের করা ফৌজদারি দরখাস্তটিকে সরাসরি হত্যা মামলা হিসেবে রুজু করার জন্য টেকনাফ থানার ওসিকে আদেশ দেন। আমি আজ (৪ অক্টোবর) জেলা ও দায়রা জজ আদালতে লিয়াকত আলীর দায়ের করা রিভিশন মামলার প্রাথমিক শুনানিতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের গত ৫ আগস্ট তারিখে দেয়া আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ওই মামলার কার্যক্রমকে ‘বেআইনি ও অবৈধ’ ঘোষণা করার আবেদন জানিয়েছি। আদালত আমার যুক্তিতর্কে সন্তুষ্ট হয়ে আবেদনটি আমলে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ শুনানি ও আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন।’
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাক বাহারছড়া চেকপোস্টে নিরাপত্তা চৌকিতে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসী বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে এসআই লিয়াকত, ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আলোচিত এ হত্যা মামলায় ৯ পুলিশ সদস্য হলেন- টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস, টেকনাফ বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মো. লিয়াকত, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা। এদের মধ্যে আসামি মোস্তফা ও টুটুল পলাতক আছেন। তাদের মধ্যে অভিযুক্ত ৭ পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও গ্রেফতার করা হয়েছে।
সিনহা হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ৭ পুলিশ, আর্মড পুলিশের ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ সদস্য ও টেকনাফ পুলিশের করা মামলার ৩ সাক্ষীসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বিভিন্ন সময় প্রত্যেককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাবাদ করা হয়েছে।