বৈশ্বিক মহামারি করোনা কালীনশিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষকদের প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা অফিস থেকে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচির আলোকে অ্যাসাইনমেন্ট এর মাধ্যমে মূল্যয়নের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেখানে শিক্ষকদের ১২টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে ৭ নাম্বারে উল্লেখ আছে যে অভিভাবক বা তার প্রতিনিধি স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতি সপ্তাহে একদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করবেন ও জমা দিবেন।
কিন্তু তার ব্যত্যয় ঘটিয়ে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার হাতেম হাসিল ভাতহাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও সদ্যই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিতে যাওয়া মো. শামীম হোসেন তালুকদার সকল শিক্ষার্থীদের টাকার বিনিময়ে বাজারের কম্পিউটারের দোকান থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করতে নির্দেশনা দেন। যা নিয়মের চরম পরিপন্থি বলে জানান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। অনেকেই আবার এটাকে চরম স্বেচ্ছাচারিতা বলেও উল্লেখ করেন।
ভাতহাড়িয়া বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় একটি দোকানের সামনে শত শত শিক্ষার্থীর ভিড়। কম্পিউটারের দোকান থেকে কেন অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অসংখ্য শিক্ষার্থী এই প্রতিবেদককে জানান, আমারা শামীম স্যারের নির্দেশে এখান থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করছি। কম্পিউটারের দোকানে দেয়া আছে উল্লেখ করে তিনি এখান থেকে নিতে বলেছেন। দোকানে ৩০টাকা করে অ্যাসাইনমেন্ট বিক্রি হচ্ছে বলেও জানায় তারা।
এ বিষয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. শামীম হোসেন তালুকদার প্রথমে সকল অভিযোগ অস্বীকার করলেও শিক্ষার্থীদের ভিডিও বক্তব্য আছে বললে তিনি আর কোনও সদুত্তর দিতে না পেরে পাশ কাটিয়ে যান।
এ বিষয়ে সদ্য আজকেই আমার শেষ কর্মদিবস উল্লেখ করে (৫ নভেম্বর) বিদায় নিতে যাওয়া প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন মল্লিক বলেন, আসলে যেহেতু আজকেই আমার শেষ দিন ও আজ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে শামীম হোসেন তালুকদারকে দায়িত্ব দেয়া হবে তাই এই বিষয়টা তিনিই দেখছেন। তিনিই সবকিছু বলতে পারবেন।
তবে এলাকার সচেতন মহলের দাবি, শামীম হোসেন তালুকদার প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পাবার আগেই যেভাবে স্বেচ্ছাচারিতা দেখাচ্ছেন তাতে প্রধান শিক্ষক হবার পরে কি করবেন জানি না।
এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, আমি নির্দেশনা দিয়েছি নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাসাইনমেন্ট বিতরণ করতে। প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানকে খরচও বহন করতে বলা হয়েছে। যেহেতু তিনি নির্দেশনা অমান্য করেছেন সেক্ষেত্রে আমি অবশ্যই সরকারি বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।